শ্বশুরবাড়িতে মৃত্যু তরুণীর, স্বামীর বিরুদ্ধে নালিশ খুনের

দুপুরে বাবাকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে খেতে দেওয়া হচ্ছে না। নির্যাতন করা হচ্ছে। আর রাতেই মেয়ের মৃত্যুর খবর পেলেন বাবা।        

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দত্তপুকুর শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৪৫
Share:

রুসিয়া খাতুন

দুপুরে বাবাকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে খেতে দেওয়া হচ্ছে না। নির্যাতন করা হচ্ছে। আর রাতেই মেয়ের মৃত্যুর খবর পেলেন বাবা।

Advertisement

বিয়ের সাত মাসের মধ্যে শ্বশুরবাড়িতে মৃত্যু হল ওই তরুণীর। শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দত্তপুকুর থানার কদম্বগাছি এলাকার সর্দারপাড়ায়।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীর নাম রুসিয়া খাতুন (২১)। তাঁর বাবা দিন মহম্মদ মণ্ডলের দাবি, মেয়েকে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুন করেছে। তিনি রবিবার সকালে দত্তপুকুর থানায় মেয়ের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি-সহ শ্বশুরবাড়ির পাঁচজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছেন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে রুসিয়াকে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, খুনের মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। আসরাফুল রহমান-সহ শ্বশুরবাড়ির অন্যদেরও খোঁজ চলছে।

শোকার্ত: রুসিয়ার মা। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের ২২ মার্চ শাসন থানার গোলাবাড়ি বাজার এলাকার বাসিন্দা রুসিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় কদম্বগাছির আসরাফুলের। পরে ৭ এপ্রিল তাঁদের রেজিস্ট্রি হয়।

মৃতার বাপের বাড়ির লোকের দাবি, বিয়েতে তাঁরা মেয়ের শ্বশুরবাড়ির দাবি মতো নগদ ৭০ হাজার টাকা, সোনার গয়না, খাট-সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দেওয়া হয়।

অভিযোগ, বিয়ের কিছুদিন পর থেকে আসরাফুল স্ত্রীকে আরও টাকা বাপের বাড়ির থেকে আনার জন্য চাপ দিতে থাকে। রুসিয়া বাবাকে ঘটনার কথা জানান। দিন মহম্মদ বলেন, ‘‘টাকা ধার দেনা করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। আর টাকা দেওয়া সম্ভব ছিল না।’’

মৃতের বাপের বাড়ির লোকের অভিযোগ, টাকা না পেয়ে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। দিন মহম্মদ বলেন, ‘‘মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে শ্বশুরবাড়ির লোকজন জোর করে তাঁকে গর্ভপাত করায়।’’

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুর ৩টে নাগাদ মেয়ে ফোন করে বাবাকে জানান, শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে খেতে দেওয়া হচ্ছে না। নির্যাতন করা হচ্ছে। দিন মহম্মদ তখন জামাইকে ফোন করেন। কিন্তু জামাই ফোন ধরেননি।

গভীর রাতে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে কেউ ফোন করে দিন মহম্মদকে জানান, রুসিয়া অসুস্থ। বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি। খবর পেয়ে দিন মহম্মদরা বারাসত জেলা হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন মেয়েকে মৃত অবস্থায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাসপাতালের মর্গের সামনে ফেলে রেখে পালিয়েছেন।

পুলিশ দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। দিন মহম্মদ বলেন, ‘‘দাবি মতো টাকা না পাওয়াতে শ্বশুরবাড়ির লোকজনই মেয়েকে গলায় ফাঁস দিয়ে মেরে ফেলেছে। ওদের শাস্তি চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন