Women Police Station Canning

ভাড়া বাড়িতেই মহিলা থানা, নেই লকআপও

মুখ্যমন্ত্রী প্রতি জেলায় মহকুমাভিত্তিক একটি করে মহিলা থানা তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন বছর কয়েক আগে। সেই অনুযায়ী, বেশির ভাগ জেলার প্রতি মহকুমায় মহিলা পুলিশ কর্মী পরিচালিত থানা তৈরিও হয়েছে।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

ক্যানিং  শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:২১
Share:

কোথাও নিজস্ব ভবন নেই, ভাড়া বাড়িতে চলছে থানা। কোনও থানায় নিজস্ব লকআপ নেই। পুলিশ কর্মীর সংখ্যাও কম বহু মহিলা থানায়।

Advertisement

ক্যানিংয়ের গোপালপুরের বাসিন্দা সাইদা পেয়াদা মাস ছ’য়েক আগে গিয়েছিলেন মহিলা থানায়। প্রতিবেশীদের হাতে আক্রান্ত হয়ে মহিলা থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও অভিযোগ সেখানে জমা নেওয়া হয়নি বলে জানালেন। তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ক্যানিং থানায়। সাইদা বলেন, "মহিলা থানায় গিয়ে কোনও লাভ হয় না। কোনও সমস্যা নিয়ে গেলে ক্যানিং থানাতেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মাঝে মধ্যে সেখানেও অভিযোগ না নিয়ে আবার এখানে পাঠানো হয়। এতে সাধারণ মানুষের হয়রানি বাড়ে।"

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর, ক্যানিং ও ডায়মন্ড হারবার মহকুমায় মহিলা থানা চলছে গত কয়েক বছর ধরে। কাকদ্বীপে অবশ্য তা তৈরি হয়নি। আবার, ক্যানিং মহিলা থানার নিজস্ব ভবন নেই, ভাড়া বাড়িতে চলছে থানা। থানার নিজস্ব লকআপ নেই। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলে তাদের ক্যানিং থানার লকআপেই রাখতে হয়। মূল থানায় আবার মহিলাদের আলাদা লকআপ নেই। থানার আলাদা একটি ঘরে মহিলাদের রাখা হয়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, মহিলা থানার নিয়ম বা সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে সেখানে এক জন ইন্সপেক্টর (আইসি) পদমর্যাদার অফিসার, তিন জন সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার অফিসার থাকার কথা। পর্যাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর ও কনস্টেবল থাকাও আবশ্যক। কিন্তু ক্যানিং মহিলা থানায় বর্তমানে এক জন মাত্র সাব-ইন্সপেক্টর, এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর ও মাত্র আট জন কন্সস্টেবল আছেন। এই সামান্য কর্মী সংখ্যা নিয়ে থানা চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে মহিলা থানায় আসা বেশিরভাগ অভিযোগকারিণীকে ক্যানিং থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে জানা গেল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা পুলিশকর্মী বলেন, “মহিলা থানার এই পরিকাঠামো নিয়ে কাজ চালানো খুবই চাপের। যে উদ্দেশ্যে এই থানাগুলি তৈরি হয়েছে, তা পূর্ণ হচ্ছে না। মূল থানার সহযোগিতা নিয়েই কাজ চালাতে হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি নানা সচেতনতামূলক কর্মসূচিতেও যোগ দিতে হয় আমাদের। লোকবল না বাড়লে মুশকিল।”

এসডিপিও ক্যানিং দিবাকর দাস বলেন, “এই থানাগুলির কাজ, মহিলাদের উপরে হওয়া অপরাধ খতিয়ে দেখা, প্রতিরোধ করা ও নির্যাতিতাদের সঠিক নিরাপত্তা দেওয়া। পাশাপাশি, এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে নারী নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, নারীপাচারের মতো সামাজিক সমস্যা দূর করার কাজেও এই থানাগুলির ভূমিকা রয়েছে। এ ছাড়া, যখন এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়, তখন এঁদের ব্যবহার করা হয়।” তিনি আরও বলেন, “পর্যাপ্ত লোকবল নেই ঠিকই, কিন্তু যা আছে তা দিয়েই আমরা পুরো বিষয়টি সামলে নিচ্ছি। ভাড়া বাড়িতে মহিলা থানা চলছে বলে এখানে লকআপ তৈরি করা হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন