মেলায় সাংসদ।—নিজস্ব চিত্র।
নেতানেত্রীরা মঞ্চেই ছিলেন। তবু প্রদীপ জ্বালিয়ে কৃষি মেলার উদ্বোধন করলেন এক জন চাষি। হাততালিতে ফেটে পড়ল দর্শক আসন।
সব দেখে উপস্থিত সাংসদ ইদ্রিশ আলি বলেন, “এই প্রথম এমন দৃশ্য দেখলাম। আমিও তো একজন কৃষক পরিবারের সন্তান। তাই এক জন কৃষককে কৃষি মেলার উদ্বোধন করতে দেখে খুব ভাল লাগছে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাদুড়িয়ার ঈশ্বরীগাছা প্রাথমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন ময়দানে শুরু হল মাটি, কৃষি, উদ্যানপালন, মৎস্য, সমবায় ও প্রাণী সম্পদ মেলা। তিন দিনের এই মেলায় কৃষিজাত ফসলের প্রদর্শনীর পাশাপাশি কৃষিকাজের সরঞ্জাম নিয়ে বারোটি স্টল করা হয়েছে। নানা ধরনের প্রতিযোগিতা, কৃষির প্রশিক্ষণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। সফল প্রতিযোগীদের পুরস্কৃতও করা হবে। এ দিন ইদ্রিশ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সোমা আড়দার, তুষার সিংহ, এডিএ পূর্ণেন্দু সরকার-সহ বিশিষ্টরা।
বিশিষ্টজনেদের সামনে মেলার উদ্বোধক হিসেবে স্থানীয় কেফায়েতকাটি গ্রামের সন্তোষ মণ্ডলের নাম ঘোষণা করে সকলকে অবাক করে দেয় মেলা কমিটি। কেমন লাগল মোমবাতি নিয়ে প্রদীপ জ্বালাতে? সন্তোষবাবু বললেন, “কখনও ভাবিনি এত গণ্যমান্য মানুষের সামনে আমার মতো এক জন সাধারণ চাষি কোনও দিন মেলা শুরু করবে।” তাঁর কথায়, “উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর চাষবাসকেই সঙ্গী করেই লড়াই শুরু। মাত্র ছ’বিঘা জমিতে ধান, সব্জি ফলিয়ে সন্তানদের পড়াশোনার দিকে এগিয়ে দিতে পেরেছি। ওরাও মুখ রেখেছে।”
এমন এক জনের হাতে কৃষি মেলার সূচনা হওয়ায় সকলেই খুশি। এডিএ পূর্ণেন্দু সরকার বলেন, “কৃষি মেলা মূলত কৃষকদের জন্য। সে কারণে ঠিক করা হয় এক জন সফল কৃষকের হাত দিয়েই মেলার উদ্বোধন করা হবে। সন্তোষবাবুকে পেয়ে আমরা গর্বিত।” ইদ্রিশ বলেন, “কৃষককে দিয়ে উদ্বোধনের পরিকল্পনা যেমন প্রশংসনীয়, তেমনি কৃষি আধিকারিকদের বলা হয়েছে, যাতে তাঁরা বেশি করে কৃষকদের হাতে কিষান বিকাশ কার্ড তুলে দিতে পারেন। তাঁদের সরকারি সমস্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়ার দিকে লক্ষ রাখেন।”