গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

দলীয় কর্মসূচি সেরে ফিরছিলেন বিজেপি নেতারা। গাড়িতে ছিলেন দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি কামদেব দত্তও। সেই গাড়িটিই ধাক্কা মারে একটি অটোতে। মৃত্যু হয় অটোর সওয়ারি এক বৃদ্ধের। পরে মারা যান তিনি। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ-বাগদা রোডের ঘাটবাওর এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ ও বসিরহাট শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:০২
Share:

দলীয় কর্মসূচি সেরে ফিরছিলেন বিজেপি নেতারা। গাড়িতে ছিলেন দলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি কামদেব দত্তও। সেই গাড়িটিই ধাক্কা মারে একটি অটোতে। মৃত্যু হয় অটোর সওয়ারি এক বৃদ্ধের। পরে মারা যান তিনি। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ-বাগদা রোডের ঘাটবাওর এলাকায়। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম আলি ভাবক (৭৪)। তিনি বাগদার গোবিন্দপুরের বাসিন্দা। কামদেববাবু বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা পুলিশকে বিষয়টি জানাই। পরে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকলে তা মর্মান্তিক।”

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, গাড়িটির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে অটোর। অটো চালক নারায়ণ বিশ্বাস, আলি ভাবক, জয় বিশ্বাস ও সঞ্জীব দালাল জখম হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের বনগাঁ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিত্‌সকেরা আলি ভাবককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকিরা চিকিত্‌সাধীন। গাড়িটি ও অটোটিকে আটক করেছে পুলিশ। কামদেববাবুদের গাড়ির চালক অবশ্য পলাতক। গাড়িটি দলেরই এক স্থানীয় নেতার। কিন্তু চালককে খুঁজে পেতে তাঁরা পুলিশকে সাহায্য করবেন কিনা বা চালকের আত্মসমর্পণ করা উচিত কিনা, তা নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি সরাসরি কোনও মন্তব্য না করলেও জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার জন্য কোন গাড়ির চালক দায়ী, তা পুলিশ-প্রশাসনের তদন্তের বিষয়।

এ দিকে, তৃণমূল নেতা গোপাল শেঠ আবার অভিযোগ করে বলেন, “গাড়ির সকলে মদ্যপ ছিলেন। দুর্ঘটনার পরে ওঁরা আহতদের ফেলে রেখে পালান।” কামদেববাবু অবশ্য এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, দুর্ঘটনাগ্রস্তদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁরা সাহায্য করেছিলেন।

Advertisement

অন্য একটি ঘটনায়, ওই দিনই সকালে লরির ধাক্কায় এক কিশোরের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বাদুড়িয়ার লবঙ্গ গ্রামে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। লরিটি ভাঙচুর করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম রাজেশ দাস (১৫)। বাড়ি সফিরাবাদ গ্রামে। মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, বেহাল রাস্তা মেরামত করতে হবে এবং ঘাতক লরির চালককে গ্রেফতার করতে হবে বিক্ষোভকারীদের এই ছিল মূল দাবি। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ চলে। এর জেরে কাটিয়াহাট-ঘোজাডাঙা সীমান্তের মধ্যে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

পুলিশ জানায়, সাইকেলে বাড়ি ফিরছিল রাজেশ। সে সময় চাল-বোঝাই একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে। ছিটকে পড়ে ছেলেটি। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রাজেশকে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই মারা যায় ছেলেটি।

অন্য দিকে, লরির ধাক্কায় রাস্তার পাশে থাকা বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে বসিরহাটের টাকি রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। শনিবার বসিরহাট থানার নেহালপুর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় বিধায়ককে ঘটনাস্থলে যেতে হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৭ জানুয়ারি বিকেলে বসিরহাটগামী একটি লরির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নেহালপুর বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকার কয়েকটি বাড়ি, দোকানে গিয়ে ধাক্কা মারে। কয়েক জন আহত হন। দুর্ঘটনার পরে লরির মালিকের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিত্‌সার খরচ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের দোকান, ঘর তৈরির আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার পরে কয়েকটা দিন পেরিয়ে গেলেও কোনও ক্ষতিপূরণ পাননি কেউ। ঘর তৈরি করতে না পেরে শীতের রাতে কিছু মানুষকে খোলা জায়গায় কাটাতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ।

তারই প্রতিবাদে শনিবার বেলা ১০টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দারা টাকি রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। খবর পেয়ে বসিরহাট উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক এটিএম আবদুল্লা রনি আসেন। বিধায়কের কাছ থেকে সাহায্যের আশ্বাস পেয়ে বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন