দেবীর আরাধনায় মেতেছে বসিরহাটও

থিমের মণ্ডপ, প্রতিমা এবং আলোর মালায় সেজে উঠেছে বসিরহাট। কোথাও কিশোরী শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে মাটির পুতুল। আবার কোথাও মণ্ডপের সামনে রংবেরঙের ডানা মেলে উড়ছে প্রজাপতি। পুজোর সঙ্গে চলছে বিভিন্ন ক্লাবগুলির সমাজসেবামূলক কাজ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০১:০৭
Share:

বসিরহাটের ফ্রেন্ডস ক্লাবের প্রতিমা।

থিমের মণ্ডপ, প্রতিমা এবং আলোর মালায় সেজে উঠেছে বসিরহাট। কোথাও কিশোরী শিল্পীর হাতের ছোঁয়ায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে মাটির পুতুল। আবার কোথাও মণ্ডপের সামনে রংবেরঙের ডানা মেলে উড়ছে প্রজাপতি। পুজোর সঙ্গে চলছে বিভিন্ন ক্লাবগুলির সমাজসেবামূলক কাজ। শীতবস্ত্র প্রদান থেকে চিকিত্‌সা পরিষেবা সবই থাকছে এই আয়োজনে। কোনও কোনও ক্লাব আবার পথ শিশুদের ভাইফোঁটা দেওয়ারও ব্যাবস্থা করেছে। তা ছাড়া, থাকছে ফুটবল প্রতিযোগিতা এবং প্রতিবন্ধীদের ট্রাই সাইকেল বিতরণ। সব মিলিয়ে এবারে বসিরহাটে কালীপুজো জমে উঠেছে।

Advertisement

বসিরহাটের মৈত্রবাগান এলাকায় নবারুণ সঙ্ঘের মণ্ডপটি তৈরি করেছেন তানিয়া ভট্টাচাযর্। আর্ট কলেজের ওই ছাত্রীর তিন সঙ্গী অরিজিত্‌, মিলন ও চিরঞ্জিত্‌কে সঙ্গে নিয়ে মাটির সরা, বিভিন্ন আকারের মাটির ভাঁড়, ধুনচির উপরে মহিলাদের নানা কীর্তির ছবি এঁকে মণ্ডপটি সাজিয়েছে। চন্দননগরের আলো থাকছে। ক্লাবের পক্ষে অসময় ভট্টাচার্য, সজল মজুমদাররা বলেন, “পুজোর পাশাপাশি দুঃস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। এলাকার মানুষকে আনন্দ দিতে থাকছে যাত্রা এবং গানের অনুষ্ঠান।” টাউনহল চত্বরের গুঞ্জন ক্লাবের পুজোর এ বার সুবর্ণ জয়ন্তী। প্লাইউডের তৈরি প্রায় সত্তর ফুট উঁচু মণ্ডপ। উদ্যোক্তাদের পক্ষে বুবাই ঘোষ বলেন, “ছোটদের আনন্দ দিতে ছবি আঁকা প্রতিযোগিতার পাশাপাশি রক্তদান শিবিরের আয়োজন হয়েছে। মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পুরষ্কৃতও করা হবে।” ইউ রিক্রিয়েশন সেন্টার, বাণী সঙ্ঘ, নবদূত, ফ্রেন্ডস ক্লাব, শতদল সঙ্ঘ, স্পোর্টস ক্লাব, সুভাষ সঙ্ঘ, বিদ্যুত্‌ সঙ্ঘ, ত্রিশুল, অগ্রগামী সঙ্ঘ, শিবম, অগ্রণী সঙ্ঘ, চৌমাথার প্রভাত ময়ূর ক্লাবের মণ্ডপ ও প্রতিমা দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। পাহাড়ের গুহার মধ্যে দিয়ে সতীর্থ সঙ্ঘের মণ্ডপে ঢুকে প্রতিমা দেখতে হবে।

গুঞ্জন ক্লাবের আলোকসজ্জা।

Advertisement

স্টার ক্লাবের ৬০ ফুট উঁচু মন্দিরটিও নজর কাড়বে দর্শনার্থীদের। ফুটবলকে থিম করে অ্যাথেলেটিক দে কলকাতা-র অনুকরণে মণ্ডপ করে সাড়া ফেলেছে কাছারিপাড়ার সৃষ্টি সঙ্ঘ। পুকুরের ধারে মন্দিরের অনুকরণে মণ্ডপ তৈরি করেছে ফ্রেন্ডস ক্লাব। তাদের অন্যতম আকর্ষণ বলতে চন্দনগরের আলো। হাসনাবাদ বাস স্ট্যান্ড বাজার কমিটি উদ্যোক্তাদের দাবি, আলো-মণ্ডপ এবং সুন্দর প্রতিমার পাশাপাশি অন্যতম আকর্ষণ আতসবাজির প্রদর্শনী। হাসনাবাদ যুবগোষ্ঠীর এ বারের আকর্ষণ উড়ন্ত প্রজাপতি। গণতান্ত্রিক প্রতিবাদী কমিটির পক্ষে পথ শিশুদের ভাইফোঁটা-সহ জনসেবামূলক কাজের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া ধূমকেতু, লস্করনগর বাজার কমিটি থেকেও নানা রকম সেবামূলক কাজের উদ্যোগ করা হয়েছে। প্রগতি সঙ্ঘ, ইছামতী সংস্কৃতিক সঙ্ঘ, রেলগেট বাজার কমিটি, চৌরঙ্গি ক্যারাম ঘর, অমর সঙ্ঘ, টাকি অগ্রদূত সঙ্ঘ, নবদয় সাংস্কৃতিক সঙ্ঘ, ভারতী সঙ্ঘ, সুভাষ সঙ্ঘগুলি কেউ তাদের মণ্ডপের সামনে কাপড়ের উপর শোলা, থার্মোকল এবং স্পঞ্জের নকসা লাগিয়ে দর্শক টানার পরিকল্পনা নিয়েছে। আবার কারও মণ্ডপে ঢুকতে গেলে পার হতে হবে পুকুরের উপর লম্বা সেতু। হিঙ্গলগঞ্জের পুকুরিয়া দুলদুলি সর্বজনীন শ্যামাপুজো কমিটি, মালোপাড়া যুবক সঙ্ঘও নানা রকম সামাজিক এবং প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সুন্দরবন-লাগোয়া কালীতলায় সমাজকল্যাণ সঙ্ঘ অতুল কৃষ্ণ রায় স্মৃতি নামে দু’দিনের ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।

ছবি: নির্মল বসু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন