দুর্ঘটনায় মৃত্যু, পথ অবরোধ

রেশন দোকান থেকে মালপত্র নিয়ে ফেরার পথে দ্রুত গতির একটি লরির পিছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক কিশোরীর। রবিবার সকাল ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ থানার চাঁদা বাজারের কাছে বনগাঁ-বাগদা সড়কে। ঘটনার পরে উত্তেজিত জনতা লরিটিতে ভাঙচুর করেন। চালক ও খালাসিকে তাড়া করেও অবশ্য ধরতে পারা যায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৪
Share:

সদ্য সন্তানহারা মা। ইনসেটে, সঙ্গীতা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

রেশন দোকান থেকে মালপত্র নিয়ে ফেরার পথে দ্রুত গতির একটি লরির পিছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক কিশোরীর। রবিবার সকাল ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ থানার চাঁদা বাজারের কাছে বনগাঁ-বাগদা সড়কে। ঘটনার পরে উত্তেজিত জনতা লরিটিতে ভাঙচুর করেন। চালক ও খালাসিকে তাড়া করেও অবশ্য ধরতে পারা যায়নি। বেপরোয়া যান চলাচল বন্ধ এবং মৃতার পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবিতে গাছের গুঁড়ি ফেলে পথ অবরোধ শুরু করেন বাসিন্দারা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সঙ্গীতা মণ্ডল (১৪)। তার বাড়ি পাশের রায়পুর-মাঠপাড়া এলাকায়। স্থানীয় চাঁদা ললিতমোহন হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে সঙ্গীতা বাড়ির চাঁদা বাজারে রেশন দোকানে গিয়েছিল। মালপত্র কিনে বনগাঁ-বাগদা সড়ক ধরে সে বাড়ি ফিরছিল। সে সময়ে বনগাঁ থেকে বাগদাগামী একটি মালবোঝাই লরি দ্রুত গতিতে যাচ্ছিল। খানাখন্দে ভরা রাস্তায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সঙ্গীতাকে প্রথমে ধাক্কা দেয়। পিছনের চাকায় জড়িয়ে যায় মেয়েটি। প্রায় ওই অবস্থায় সঙ্গীতাকে কুড়ি ফুট টেনে নিয়ে যায় লরিটি। তত ক্ষণে ওই কিশোরীর মাথা দিয়ে ঘিলু বেরিয়ে গিয়েছে।

সঙ্গীতার বাবা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। দাদু খেতে কাজ করছিলেন। খবর পেয়ে মাঠে জ্ঞান হারান। তাঁকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। লরিটিকে ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। তেলের ট্যাঙ্ক ফুটো করে দেয়। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে শুরু হয় অবরোধ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেপরোয়া গাড়ি চালাচলের জন্য ওই এলাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। চালকের বদলে খালাসি গাড়ি চালান। তা ছাড়া, সড়ক সংস্কারের কাজও হচ্ছে ধীর গতিতে।

Advertisement

পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ গাড়িতে তুলে নিয়ে আসতে গেলে জনতা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। পুলিশের সঙ্গে এক জন ফটোগ্রাফার নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রটে যায়, পুলিশ সঙ্গে করে ভুয়ো সাংবাদিক এনেছে। এর জেরে উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করেই পুলিশ দেহ তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। মহিলারা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। জনতা দাবি করে, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা না আসা পর্যন্ত দেহ ছাড়া হবে না। পরে সাংবাদিকেরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার পরে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। পুলিশও ক্ষতিপূরণের বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছে। ঘটনাস্থলের পাশেই ওই কিশোরীর পিসির বাড়ি। সেখানে আসেন সঙ্গীতার মা অনিমাদেবী। তিনি বলেন, “মেয়ে নিজের ছবি তুলেছিল। স্কুলে জমা দিলে বৃত্তির টাকা পেত। সেই টাকায় স্কুলের নতুন ইউনিফর্ম কিনবে বলে কত আশায় ছিল। ওর আর সেই পোশাক পরা হল না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন