এই হাল হয়েছে সেতুর। ছবি: নির্মল বসু।
দুর্বল সেতুর উপর দিয়েই বিপজ্জনক ভাবে গাড়ি চলে। হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। সেতুতে ভারি গাড়ি ওঠা নিষেধ, এই নোটিস ঝোলানো আছে। কিন্তু সে সব দেখা-শোনার বালাই নেই কারও। সেতু সংস্কারে হুঁশ নেই কর্তৃপক্ষেরও। যে কোনও মুহূর্তে ঘটতে পারে বড়সড় দুর্ঘটনা। বসিরহাট ১ ব্লকের মালতিপুর সেতুর এমনই দুরবস্থা।
দীর্ঘ দিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মালতিপুরের দিকে সেতুর রেলিং-সহ বেশ কিছুটা ভেঙে পড়েছে। বসিরহাটের মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, “নিষেধ থাকা সত্ত্বেও ওই সেতু দিয়ে কেন ভারি গাড়ি চলাচল করছে, বুঝতে পারছি না। সেতুর দায়িত্ব জলসম্পদ বিভাগের। সেতু মেরামতির বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরের নজরে আনা হয়েছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৭০ সাল নাগাদ কোড়াপুর ও মালতিপুর গ্রামের মাঝে শিয়ালদহ খালের উপরে (অনেকের কাছে বিদ্যাধরী নদীর শাখা বলে পরিচিত) প্রায় ৩০ মিটার লম্বা কংক্রিটের সেতুটি নির্মাণ হয়েছিল। সেতুটির মাধ্যমে বসিরহাট হয়ে হাড়োয়া এবং কলকাতার রাজারহাটের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটেছে। সেতুটি ব্যবহার করে কলকাতা থেকে বসিরহাটে অনেক কম সময়ে পৌঁছনো যায়। মালতিপুর হাইস্কুল, স্টেশন, কাদেরিয়া হাইমাদ্রাসা-সহ বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা, মিশন, স্কুল এবং বসিরহাট কলেজ, বসিরহাট জেলা হাসপাতালে আসতে গেলে ওই সেতুই ভরসা।
সেতুর উপর ভারি গাড়ি না তোলার কথা নোটিস টাঙিয়ে জানিয়ে দিয়ে প্রশাসন দায় সেরেছে বটে, কিন্তু সেতুটি সারানোর কোনও উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। ফলে সে সবের তোয়াক্কা না করেই চলে পারাপার। কল্পনা সরকার, আব্দুল ওয়াহাব, সাকিলা খাতুনরা বলেন, “রেলিং ভেঙে বর্তমান অবস্থা যা হয়েছে, তাতে বিপদের আশঙ্কা নিয়েই এখান দিয়ে চলাচল করতে হয়। প্রশাসন থেকে একটি নিষেধাজ্ঞার বোর্ড লাগিয়েছে। তবে দ্রুত সারানোর কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
এ বিষয়ে বসিরহাট উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক এটিএম আবদুল্লা রনি বলেন, “সেতু সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরু করতে সংশ্লিষ্ট দফতরকে বলা হয়েছে। তবে যত দিন না পর্যন্ত সেতুর মেরামত হচ্ছে, তত দিন ভারি গাড়ি বা সেতুর উপর দিয়ে যাত্রী তুলতে নিষেধ করা হয়েছে।”