নামখানায় প্যাকেজ ঘোষণা শীঘ্রই, আশ্বাস দিলেন মন্ত্রী

নামখানার হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীর উপর সেতু তৈরির জন্য উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ আর দিন পনেরোর মধ্যে চূড়ান্ত হবে বলে জানাল রাজ্য সরকার। তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে দেওয়া হবে এই প্যাকেজ এ রকমই ইঙ্গিত দিয়েছেন সুন্দরবন উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা। বেশির ভাগ ব্যবসায়ী ইতিমধ্যেই তাঁদের দোকানপাট ভেঙে সরিয়ে নিয়েছেন। তাঁদের পাশে রাজ্য সরকার দাঁড়াবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। প্যাকেজের অঙ্ক কী হবে, কারা কারা তা পাবে তার কোনও চূড়ান্ত রূপরেখা অবশ্য এখনও তৈরি হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৫৩
Share:

নামখানার হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীর উপর সেতু তৈরির জন্য উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ আর দিন পনেরোর মধ্যে চূড়ান্ত হবে বলে জানাল রাজ্য সরকার।

Advertisement

তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে দেওয়া হবে এই প্যাকেজ এ রকমই ইঙ্গিত দিয়েছেন সুন্দরবন উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা। বেশির ভাগ ব্যবসায়ী ইতিমধ্যেই তাঁদের দোকানপাট ভেঙে সরিয়ে নিয়েছেন। তাঁদের পাশে রাজ্য সরকার দাঁড়াবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী। প্যাকেজের অঙ্ক কী হবে, কারা কারা তা পাবে তার কোনও চূড়ান্ত রূপরেখা অবশ্য এখনও তৈরি হয়নি বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। তবে নারায়ণপুরে দু’টি সরকারি জমির একটিতে এবং নামখানার পুরনো বাজারের জমিতে সুপারমার্কেট গড়ার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

নদীর এ পাড়ে নারায়ণপুর এবং ও পাড়ে নামখানায় দোকান এবং বাড়ি সরিয়ে নেওয়ার নোটিস পেয়েছিলেন ৯১৮ জন। উচ্ছেদ হওয়া এই ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দাদের তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে প্যাকেজ ঠিক করা হবে বলে রাজনৈতিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাসক দল। এ প্রসঙ্গে মন্টুরামবাবু বলেন, “ভেঙে সরানো স্থায়ী, আংশিক স্থায়ী এবং অস্থায়ী কংক্রিটের নির্মাণ এই তিন শ্রেণির জন্য আলাদা আলাদা প্যাকেজ করা হবে। আমরা আর ১৫ দিনের মধ্যেই বিষয়টি চূড়ান্ত করব।” সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী, জেলা শাসক এবং পূর্ত (জাতীয় সড়ক) ইঞ্জিনিয়ারদের প্যাকেজ ঠিক করা নিয়ে বৈঠকের দিন ক্ষণ যদিও এখনও ঠিক হয়নি বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

নামখানায় গত ২৯ আগস্ট সর্বদলের বিডিও অফিস অভিযানের আগে মন্ত্রী এলাকার কিছু ব্যবসায়ীর সঙ্গে বৈঠক করে নদীর দু’পাড়ে তাঁদের স্থায়ী বাজার তৈরির জন্য জায়গা দেখতে বলেছিলেন। নদীর ও পারে নামখানার বিডিও অফিস পর্যন্ত সওয়া কিলোমিটার এলাকায় বাজার গড়ার জন্য কিছুটা রায়ত জমি রয়েছে। কিন্তু তার দাম এখন লাফিয়ে বাড়ছে। তাই নদীর পাড় থেকে ৩০০ মিটারেরর মধ্যে পুরাতন বাজারে ১৫ কাঠা মতো এলাকায় সুপার মার্কেট গড়ার প্রস্তাব হয়েছে। নামখানায় তার থেকে ভাল আর কোনও জমি পাওয়া যায় কিনা, তারও খোঁজ চলছে। নদীর এ পাড়ে নারায়ণপুরের গোলপার্ক থেকে উত্তরে ৩৫০ ফুটের মধ্যে রাস্তার দু’ধারে প্রায় ১ একরের দু’টি জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। এই তিনটির দুটিতে হবে নতুন বাজার।

মন্টুবাবুর আশ্বাস, নারায়ণপুরে রায়ত জমি পাওয়ার সমস্যা রয়েছে। তাই সেচ দফতরের জমির উপরেই সুপার মার্কেট গড়ার পরিকল্পনা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে, জমি পাওয়ার ছাড়পত্র তাঁরাই জোগাড় করবেন। মন্টুবাবুর কথায়, “ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছিল, এলাকা চিহ্নিত করতে। তা হয়ে গিয়েছে। রাজ্য সরকারই দু’টি স্থায়ী বাজার গড়ার টাকা খরচ করবে।” পুনর্বাসন প্যাকেজ এবং বাজার তৈরির জন্য প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচা হবে বলে হিসেব করছেন শাসক দলের নেতারা।

তবে এই আশ্বাস কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সিপিএম-সহ অন্যান্য দলগুলির সঙ্গে থাকা বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীদের। তাঁদের দাবি, মন্ত্রী এ রকম অনেক কথাই বলছেন, কিন্তু দোকান ভাঙা হয়ে গেলেও এত দিন ধরে প্যাকেজের ঘোষণা কেন আটকে রয়েছে? ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সাধারণ প্রশাসন এবং পুলিশ ছাড়াও মন্ত্রী নিজে এলাকায় গিয়ে দোকান না সরিয়ে নিলে ‘দেখে নেওয়া হবে’ বলে হুমকিও দিয়েছেন। তবে এ দিন তা অস্বীকার করেন মন্টুবাবু। তাঁর বক্তব্য, “ব্যবসায়ীরা নিজেরাই সরেছেন সেতু নিমর্মাণের কথা মাথায় রেখে। তাই রাজ্য সরকারও খুশি। ধমক দেওয়ার প্রশ্ন উঠছে কোথা থেকে?”

ইতিমধ্যেই আবার নতুন কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। ৯১৮ জন ব্যবসায়ীর মধ্যে প্রায় ৭০ জনের দোকান রাস্তা থেকে ৬০ ফুটের মধ্যে পড়লেও তাঁদের কাছে কোনও ভাবে দোকান সরিয়ে ফেলার নোটিস পৌঁছয়নি। তাঁরা সংশ্লিষ্ট বিডিও অফিসে নতুন করে নোটিস পাওয়ার জন্য আবেদন করছেন। সেখান থেকে জানানো হয়েছে, এ ব্যাপারে আবেদন করতে হবে পূর্ত (জাতীয় সড়ক) কর্তৃপক্ষের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন