প্রৌঢ়াকে খুন করে দেহ রেললাইনে

রেললাইনের উপর থেকে এক প্রৌঢ়ার ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার করল বনগাঁ জিআরপি থানার পুলিশ। ঘটনাটি ঘটছে মঙ্গলবার সকালে বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার মছলন্দপুর ও সংহতি স্টেশনের মাঝে। রেল পুলিশ জানিয়েছে, নিহত প্রৌঢ়ার নাম সরস্বতী হাওলাদার (৫৪)। তাঁর বাড়ি হাবরা থানার রাজবল্লভপুর ২ নম্বর কলোনি এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩২
Share:

রেললাইনের উপর থেকে এক প্রৌঢ়ার ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার করল বনগাঁ জিআরপি থানার পুলিশ। ঘটনাটি ঘটছে মঙ্গলবার সকালে বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার মছলন্দপুর ও সংহতি স্টেশনের মাঝে। রেল পুলিশ জানিয়েছে, নিহত প্রৌঢ়ার নাম সরস্বতী হাওলাদার (৫৪)। তাঁর বাড়ি হাবরা থানার রাজবল্লভপুর ২ নম্বর কলোনি এলাকায়। দেহটি উদ্ধারের সময় নিহতের মাথা থেকে ধড় আলাদা ছিল। শরীরের বিভিন্ন অংশও টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। রেল পুলিশের অনুমান, দেহের উপর দিয়ে একাধিক ট্রেন যাওয়ার ফলেই এই পরিস্থিতি। ময়না-তদন্তের জন্য দেহ বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, প্রৌঢ়াকে বাড়িতে খুন করে রেললাইনের উপরে ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রৌঢ়ার দাদা ভূপেন সমাদ্দার খুনের অভিযোগ দায়ের করেন বনগাঁ জিআরপি-র কাছে। সঞ্জীব ঢালি নামে এক পড়শিকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। বীরু ঢালি নামে অভিযুক্ত এক জনের খোঁজ চলছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ছিলেন সরস্বতীদেবী ও তাঁর এক আত্মীয় ৭৫ বছরের বৃদ্ধা সুমতি ব্যাপারী। তিনি আবার অসুস্থও। সরস্বতীদেবীর দুই ছেলে-মেয়ে। ছেলে জয়ন্ত ও মেয়ে জয়ন্তী। ছেলে শিলিগুড়িতে কাপড়ের ব্যবসা করেন। শিলিগুড়িতে মেয়েকে নিয়ে দিন দু’য়েক আগে ছেলের কাছে গিয়েছিলেন প্রৌঢ়ার স্বামী অনিলচন্দ্র হাওলাদার। কথা ছিল, শিলিগুড়িতে ছেলের কাছে থেকেই মেয়ের বিয়ে দেবেন। এলাকার প্রতিবেশীদের কেউ কেউ মেয়ের বিয়ের সম্বন্ধ ভেঙে দিচ্ছিলেন বলেও পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে। শুক্রবার সেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।

রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ সরস্বতীদেবী বাড়িতে ভাত খাচ্ছিলেন। সে সময়ে কয়েক জন প্রতিবেশী বাড়িতে ঢুকে তাঁর উপরে চড়াও হয়। বৃদ্ধাকে শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলেই মারা যান। তারপর বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে বৃদ্ধাকে নিয়ে গিয়ে রেললাইনের উপর ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।

Advertisement

সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, বাড়ি থেকে রেললাইন পর্যন্ত রক্ত পড়ে আছে। সেই রক্ত অভিযুক্তেরা জল ঢেলে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন বলে রেলপুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছেন। ঘরে গিয়ে দেখা গেল, তখনও ভাতের থালা উল্টানো। রান্না ঘরে রক্ত পড়ে আছে।

মঙ্গলবার সকাল ৭টা ২২ মিনিট নাগাদ এক ট্রেন চালক দেখতে পান, লাইনে দেহ পড়ে আসে। তিনি মছলন্দপুরে স্টেশন ম্যানেজারকে খবর দেন। সেখান থেকে খবর যায় জিআরপির কাছে। স্থানীয় বাসিন্দারা রেললাইনের পাশে সরস্বতীদেবীর ছিন্নভিন্ন মৃতদেহ দেখতে পেয়ে মছলন্দপুর পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন। বনগাঁ জিআরপিকে বিষয়টি জানালে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে সকাল ১০টা নাগাদ দেহটি উদ্ধার করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অনিলবাবুদের সঙ্গে এক প্রতিবেশীর জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিবাদ চলছিল। ১৫ কাঠার একটি জমি বহু দিন ধরেই অনিলবাবুদের দখলে রয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশী ওই ব্যক্তির দাবি, জমিটি তাঁদের। তা নিয়ে ঝগড়াও হয়েছে দু’পক্ষের। কয়েক দিন কিছু পড়শি অনিলবাবুর বাড়িতে গিয়ে ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া, খুনের হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement