স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে স্বামীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিল জনতা। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের সাঁইপালার ঘিপুকুর এলাকায়। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম লিপিকা মণ্ডল (৩০)। তাঁর মা ভারতী মণ্ডলের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ লিপিকার স্বামী, পেশায় হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী সুদীপ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ন’বছর আগে বসিরহাটের নৈহাটি মোক্তার বটতলার বাসিন্দা সুদীপের সঙ্গে বিয়ে হয় সাঁইপালার লিপিকার। বিয়েতে যৌতুক বাবদ জিনিসপত্র দেওয়া সত্ত্বেও ঘরজামাই লিপিকা প্রায়ই স্ত্রীর উপরে নির্যাতন করত বলে অভিযোগ। তা সত্ত্বেও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী লিপিকা মুখ বুজে থাকতেন।
ইতিমধ্যে তাঁদের এক সন্তান হয়। তা সত্ত্বেও দেগঙ্গার একটি হাসপাতালের অস্থায়ী কর্মী সুদীপের স্বভাব বদলায়নি। বরং অত্যাচার আরও বাড়তে থাকে বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানায়, এ দিন সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া। সুদীপ ফের স্ত্রীকে মারধর শুরু করে। প্রথম প্রথম এমন ঘটনা ঘটলে প্রতিবেশীরা সাহায্য করতে এগিয়ে আসতেন। কিন্তু নিত্যদিনের ঘটনা বলেই আর গা করেননি এ দিন।
রাত ১০টা নাগাদ মেয়ে বাথরুমে ঢুকে গায়ে আগুন দিয়েছে বলে ভারতীদেবীর চিত্কারে প্রতিবেশীরা এসে দরজা ভেঙে লিপিকাকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করেন। মহিলাকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রাতে সেখানেই মারা যান লিপিকা। এই ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ জনতা সুদীপকে মারধর করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ক্ষিপ্ত জনতার হাত থেকে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পরে গ্রেফতার করে। ভারতীদেবী বলেন, “বেতনের পুরো টাকার দাবিতে প্রায়ই জামাই লিপিকাকে মারধর করত। বাধা দিলেও কথা কানে তুলত না সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই জামাইয়ের সব অত্যাচার সহ্য করত মেয়ে। অত্যাচার মাত্রা ছাড়ানোয় আত্মহত্যার পথ বেছে নিল।”