বাড়িতে ঢুকে মহিলাকে বেঁধে লুঠের অভিযোগ

ভরদুপুরে কলিং বেল শুনে দরজার আই-হোলে চোখ রেখেছিলেন মহিলা। তার পরেই চমকে ওঠেন তিনি। দেখেন, কালো কাপড়ে মুখ বেঁধে দু’জন দাঁড়িয়ে রয়েছে। এর পরেই ছুটে বাড়ির দোতলায় উঠে যান তিনি। কিন্তু তত ক্ষণে দরজার ছিটকিনি ভেঙে দোতলার ওই ঘরে পৌঁছে গিয়েছে দুষ্কৃতীরাও। অভিযোগ, এর পরেই মহিলার হাত-মুখ বেঁধে স্প্রে ছড়িয়ে অজ্ঞান করে দেয় তারা। তার পর টাকা ও গয়না লুঠ করে পালিয়ে যায় তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৪ ০২:০৯
Share:

ভরদুপুরে কলিং বেল শুনে দরজার আই-হোলে চোখ রেখেছিলেন মহিলা। তার পরেই চমকে ওঠেন তিনি। দেখেন, কালো কাপড়ে মুখ বেঁধে দু’জন দাঁড়িয়ে রয়েছে। এর পরেই ছুটে বাড়ির দোতলায় উঠে যান তিনি। কিন্তু তত ক্ষণে দরজার ছিটকিনি ভেঙে দোতলার ওই ঘরে পৌঁছে গিয়েছে দুষ্কৃতীরাও। অভিযোগ, এর পরেই মহিলার হাত-মুখ বেঁধে স্প্রে ছড়িয়ে অজ্ঞান করে দেয় তারা। তার পর টাকা ও গয়না লুঠ করে পালিয়ে যায় তারা।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, আগরপাড়ার উপেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোডের বাসিন্দা নীতু সিংহ নামে ওই মহিলা রবিবার বেলা পৌনে তিনটে নাগাদ তাঁর বাড়িতে একাই ছিলেন। সে সময় দুই অজ্ঞাতপরিচয় যুবক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাঁর বাড়িতে ঢুকে ওই মহিলাকে বেঁধে ও অজ্ঞান করে ১৫০০ টাকা-সহ সোনার গয়না লুঠ করেছে বলে অভিযোগ। লুঠপাট শেষ হওয়ার কিছু ক্ষণ পরে নীতুর এক পিসতুতো বোন সোনু সিংহ (যিনি কয়েক দিন ধরেই ওই বাড়িতে রয়েছেন) বাড়িতে ফেরেন। তিনিই দিদির বাঁধন খুলে পাড়ার লোকদের খবর দেন। এর পরে খড়দহ থানার পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।

পুলিশের চোখে প্রশ্ন

Advertisement

• দরজা ভাঙল, অথচ ছিটকিনি প্রায় অক্ষত।

• স্প্রে ছিটোনো সত্ত্বেও মহিলা আচ্ছন্ন হননি।

• দরজা বন্ধ থাকলে মহিলার গতিবিধি দুষ্কৃতীরা জানল কী করে?

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, গোটা ঘটনার মধ্যে বেশ কিছু ধোঁয়াশা রয়েছে। মহিলার বয়ানেও অসঙ্গতি রয়েছে। কী রকম?

পুলিশ সূত্রের খবর, মহিলা যে ভাবে ঘটনার কথা জানাচ্ছেন, তাতে পাড়ার লোকদের কিছু নজরে আসার কথা। কিন্তু তেমন কোনও প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ পায়নি। মহিলার অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা দরজার ছিটকিনি ভেঙে ভিতরে ঢুকেছিল। কিন্তু দরজার ছিটকিনির একটি স্ক্রু খোলা রয়েছে। বাইরে থেকে ধাক্কা মেরে ভাঙার কোনও চিহ্ন নেই।

তদন্তকারীরা বলছেন, সাধারণত স্প্রে ছিটিয়ে কাউকে অজ্ঞান করা হলে তার মধ্যে একটা ঘুম-ঘুম ভাব দেখা যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মহিলার মধ্যে তেমন কোনও আচ্ছন্ন ভাব চোখে পড়েনি বলেই পুলিশের দাবি। ওই এলাকায় ঘন ঘন বসতবাড়ি রয়েছে। মহিলা দুষ্কৃতী দেখলে তড়িঘড়ি চিৎকার করলেন না কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

পুলিশ বলছে, মহিলা আই-হোল দিয়ে দুষ্কৃতী দেখলেন। তার পরে তিনি দোতলায় উঠে গেলেন। এই পুরো ঘটনা বাইরে থাকা দুষ্কৃতীরা কী ভাবে দেখল এবং সেই মতো ঘরে ঢুকেই সোজা দোতলায় পৌঁছল কী করে, তা নিয়েও তদন্তকারীদের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। ব্যারাকপুরের গোয়েন্দাপ্রধান সি সুধাকর বলেন, “ঘটনা ও মহিলার বয়ানে বিস্তর অসঙ্গতি মিলেছে। আসলে কী ঘটেছিল, তা জানার চেষ্টা চলছে।”

এ দিনের ঘটনা চাউর হতেই আশপাশের বাসিন্দারা ওই পাড়ায় ভিড় জমান। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই বাড়িতে মাঝেমধ্যেই দুই যুবকের আসা-যাওয়া ছিল। তারাই এ দিনের ঘটনায় জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন