সন্দেহ গণধর্ষণের

বাড়ির অদূরেই মিলল মহিলার অর্ধনগ্ন দেহ

আদিবাসী এক বিবাহিত মহিলাকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুকুরিয়া গ্রামের কলোনিপাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের বয়স বছর আঠাশ। বাড়ি ওই এলাকায়। তাঁর দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:০৬
Share:

আদিবাসী এক বিবাহিত মহিলাকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুকুরিয়া গ্রামের কলোনিপাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের বয়স বছর আঠাশ। বাড়ি ওই এলাকায়। তাঁর দাদার অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হয় দত্তপুকুরের এক ব্যক্তির। যিনি কর্মসূত্রে তামিলনাড়ুতে থাকেন। তাঁদের দুই মেয়ে। গত কয়েক মাস আগে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে বাবার কাছে থাকা শুরু করেন ওই বধূ। এ দিন সন্ধ্যায় দুলদুলিতে মেলা দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময় তাঁকে কয়েক জন যুবক নানা ভাবে উত্যক্ত করে বলে অভিযোগ। এরপর ওই মেলা থেকে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন।

পুলিশ জানায়, রাত ১টা নাগাদ মোবাইলে ফোন আসায় ঘুম ভাঙে ওই বধূর। ফোন পেয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে জরুরি প্রয়োজন ‘এখুনি আসছি’ বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এরপর থেকেই তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

Advertisement

এ দিকে সারা রাত বোন বাড়ি না ফেরায় ভোররাতে বাড়ির লোক খুঁজতে বেরোন। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি মাঠে কাজ করতে গিয়ে গ্রামেরই এক জন ওই মহিলাকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তিনিই গ্রামবাসীদের খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। মহিলার দাদা দেহ সনাক্ত করেন। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য বসিরহাট হাসপাতালে পাঠিয়েছে। তরুণীর দাদা বলেন, “সুভাষ নামে এক জন আমার বোনকে ডেকে নিয়ে যায় বলে আমি জানতে পরি। সন্ধ্যায় মেলাতে ওই সুভাষ তাঁর বন্ধুদের নিয়ে বোনকে নানা ভাবে উত্যক্ত করছিল। আমাদের অনুমান, কোনও প্রলোভন দেখিয়ে বোনকে নিয়ে গিয়ে ওর উপরে অত্যাচার করা হয়। পরে লোক জানাজানির ভয়ে ওরাই বোনকে খুন করেছে।”

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের প্রশ্রয়েই একটি দুষ্কৃতী চক্র বিভিন্ন গ্রামে নানা নাম দিয়ে মেলার আয়োজন করছে। ওই মেলার প্রধান আকর্ষণ হল কম পোশাকে কিশোরীদের নাচ ও গানের আসর। যাকে স্থানীয় মানুষ ‘ড্যান্স হাঙ্গামা’ বলেন। মেলায় আসা দর্শনার্থীদের জুয়া খেলার সঙ্গেও জড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকার মানুষ জুয়া এবং ড্যান্স হাঙ্গামা বন্ধের জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দাবি জানিয়েছেন। তা সত্ত্বেও একটি চক্র কিন্তু পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে আর্থিক রফার মাধ্যমে মেলার নাম করে এই অনুষ্ঠান চালাচ্ছে। এর প্রতিবাদে নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে বিডিওর কাছে একবার স্মারকলিপিও দেওয়া হয় বলে জানান এলাকাবাসী। কিন্তু তবু মেলার নাম করে এই অনুষ্ঠান বন্ধ করতে পারছে না প্রশাসন।

এ দিকে, খুনের প্রতিবাদে করে আজ, শনিবার সুন্দরবন এলাকায় ধিক্কার মিছিলের ডাক দিয়েছে রাজ্য আদিবাসী অধিকার মঞ্চ। ওই মঞ্চের জেলা সম্পাদক তথা সন্দেশখালির সিপিএমের বিধায়ক নিরাপদ সর্দার বলেন, “পুলিশ ও প্রশাসনের একাংশের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে একটি চক্র মেলার নাম করে এই সব অসামাজিক কাজ করছে। এমনকী, মেলায় আসা মহিলাদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহারও করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন এর কোনও ব্যবস্থা করছে না। মেলাতে এই ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন