বেহাল তালদি-জীবনতলার রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।
অনেক আগেই পিচ উঠে গিয়েছে রাস্তায়। পদে পদে বড় গর্ত আর খানাখন্দ। বর্ষায় জল জমে যায়। গাড়ি যাতায়াত করতে গেলে যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভবনাও রয়েছে। এমনই অবস্থা ক্যানিংয়ের জীবনতলা থেকে টুডি পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার ও তালদি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১২ কিলোমিটার ও কালীতলা পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তার।
এলাকার মানুষের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে এমনই বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে রাস্তাগুলি। অথচ ক্যানিং বিধানসভা কেন্দ্রের বেশির ভাগ মানুষই ওই রাস্তার উপর নির্ভরশীল। এক মাত্র জীবনতলাতেই রয়েছে ব্লক অফিস-সহ অন্যান্য সরকারি অফিস, থানা, ব্যাঙ্ক, স্কুল, কলেজ থেকে বাজার সব কিছুই। তাই রাস্তা বেহাল থাকায় নিত্য দুর্ভোগ পোহাতে হয় বাসিন্দাদের।
নিত্যযাত্রী হালিমা বিবি, গোলাম রসুল মোল্লা, শঙ্কর দাসেরা বলেন, “তালদি রেলগেট থেকে অটো, ট্রেকার বা ভ্যানোতে করে জীবনতলায় কাজে যেতে হয়। রাস্তা খারাপ থাকায় অনেক সময়ে সমস্যায় পড়তে হয়। রাস্তার গর্তে মাঝেমধ্যেই অটো উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে। আর সন্ধ্যে হয়ে গেলে জীবনতলা থেকে কোনও গাড়িই যেতে চায় না।”
টুডি-জীবনতলা রুটের এক অটো চালক কবির আলি বলেন, “রাস্তার যা হাল তাতে গাড়ি চালালেই খারাপ হয়। গাড়ির যন্ত্রাংশের যা দাম, তাতে পোষায় না। যাত্রীদের কথা ভেবে গাড়ি বন্ধও করতে পারি না। আবার বেশি ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতেও যাত্রীদের আপত্তি। ফলে আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। জানি না, এ ভাবে কতদিন চালানো যাবে।”
স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াজেদ মোল্লা, রহিম মীররা বলেন, “যতদূর মনে পড়ে, বাম আমলের শেষের দিকে একবার রাস্তা সংস্কার করা হয়েছিল। তারপর থেকে তো আর কিছুই হয়নি। এই নিয়ে আমরা বারবার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সওকত মোল্লার কাছে আবেদন জানিয়েছি, রাস্তা সংস্কার করার জন্য।”
রাস্তার বেহাল দশা মেনে নিয়ে সওকত মোল্লার বক্তব্য, “রাস্তাগুলি সত্যিই খারাপ হয়ে গিয়েছে। এলাকার মানুষ আমাদের জানিয়েছে। রাস্তাগুলি দ্রুত সারানো ও চওড়া করার জন্য জেলা পরিষদে প্রস্তাব দিয়েছি।”
জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখ বলেন, “রাস্তাগুলির খারাপ দশার কথা আমরা জানি। কিন্তু এই মুহূর্তে কাজ শুরু করার মতো টাকা নেই। কেন্দ্র থেকেও কোনও টাকা অনুমোদন হয়নি। টাকা এলেই কাজ শুরু করা হবে।” তাঁর সংযোজন, “জেলা পরিষদে ক্ষমতায় আসার পরে আমরা এক বার ওই রাস্তা সংস্কার করেছিলাম। উন্নয়ন তো থেমে নেই।” তবে কবে কাজ শুরু হবে, তার অবশ্য কোনও সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।