মাটি খুঁড়ে উদ্ধার নিখোঁজ তৃণমূল নেতার মৃতদেহ

মাটি খুঁড়ে মিলল তৃণমূল নেতার দেহ। গত শনিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন জয়নগর ২ ব্লকের নলগড়া পঞ্চায়েতের সদস্য সুনীল হালদার (৫২)। মঙ্গলবার দুপুরে মথুরাপুর থানার লালপুর এলাকা থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। দু’টি হাত পিছমোড়া করে বাঁধা ছিল। মুখে কাপড় গোঁজা অবস্থায় খালের ধারে নরম মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল দেহ। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই সুনীলবাবু খুন হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৪ ০১:০৬
Share:

সুনীল হালদার।

মাটি খুঁড়ে মিলল তৃণমূল নেতার দেহ।

Advertisement

গত শনিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন জয়নগর ২ ব্লকের নলগড়া পঞ্চায়েতের সদস্য সুনীল হালদার (৫২)। মঙ্গলবার দুপুরে মথুরাপুর থানার লালপুর এলাকা থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। দু’টি হাত পিছমোড়া করে বাঁধা ছিল। মুখে কাপড় গোঁজা অবস্থায় খালের ধারে নরম মাটিতে পুঁতে রাখা হয়েছিল দেহ। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই সুনীলবাবু খুন হয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে নলগড়ার তৃণমূল নেতা শাজাহান মোল্লা-সহ পাঁচ জনকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের ভাইস চেয়ারম্যান শক্তি মণ্ডল বলেন, “অপরাধীদের কোনও রাজনৈতিক রঙ নেই। পুলিশ তদন্ত করে কঠিন শাস্তি দেবে। এই ঘটনায় যদি আরও কেউ জড়িত থাকে, তা হলে তাদেরও গ্রেফতার করতে হবে।”

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নলগড়া এলাকার প্রভাবশালী নেতা ছিলেন সুনীলবাবু। গত লোকসভা ভোটের মাস ছ’য়েক আগে শাজাহান মোল্লা তৃণমূলে যোগ দেয়। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, খুন-সহ একাধিক মামলা রয়েছে। আপাতত জামিনে মুক্ত ছিল সে। ভোটের সময়ে তৃণমূলের হয়ে প্রচারে দেখা গিয়েছে তাকে। ভোটের পরে জয়নগরের খেয়া এলাকায় টাকা নিয়ে সরকারি জমিতে শাজাহান দোকান বসানো শুরু করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। যার প্রতিবাদ করেন সুনীলবাবু। এ নিয়ে শাজাহানের সঙ্গে তাঁর কয়েক বার প্রকাশ্যে বিবাদও বেধেছিল। ঝামেলা হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছেছিল বলেও জানিয়েছেন দলের কর্মীরা।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনার জেরেই শাজাহান ভাড়াটে খুনি দিয়ে সুনীলবাবুকে খুন করিয়েছে। সুনীলবাবু নিখোঁজের পর থেকেই শাজাহানের দিকেই সন্দেহের তির ছিল। সুনীলবাবুর পরিজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রবিবার রাতে তাকে গ্রেফতার করে। দফায় দফায় জেরা করার পরে শাজাহান খুনের বিষয়টি স্বীকার করে বলে পুলিশের দাবি।

গত শনিবার ডায়মন্ড হারবারে এক দলীয় বৈঠকে গিয়েছিলেন সুনীলবাবু। ওই বৈঠক সেরে তিনি দক্ষিণ বারাসত এলাকায় আসেন। তারপর থেকেই খোঁজ মিলছিল না। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, সুনীলবাবুকে দক্ষিণ বারাসত এলাকা থেকে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর লালপুর এলাকায় একটি ফাঁকা মাঠে শ্বাসরোধ করে খুন করার পরে খালের ধারে পুঁতে দেওয়া হয়। সোমবার রাতে জাকির নামে শাজাহানের এক শাগরেদকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতকে জেরা করে সুনীলবাবুর খুনের বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ। তারপরেই মঙ্গলবার সকালে খালের ধার থেকে দেহ উদ্ধার হয়। পরিজনেরা দেহ শনাক্ত করেন।

অন্য একটি ঘটনায়, মঙ্গলবার কুলতলির জালাবেড়িয়া এলাকায় অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছে। একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল দেহে। সেটি ময়না-তদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, বাইরে কোনও জায়গায় খুন করে এনে দেহ ফেলে দেওয়া হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন