লোকাল ট্রেনে যুবককে কুপিয়ে ছুড়ে ফেলা হল দেহ

যাত্রী সেজে উঠে চলন্ত ট্রেনের কামরায় এক প্রতিবন্ধী যুবককে কুপিয়ে খুন করে দেহ ছুড়ে বাইরে ফেলে দিল দুষ্কৃতীরা। শনিবার দুপুরে পূর্ব রেলের ডায়মন্ড হারবার-শিয়ালদহ শাখার গুরুদাসনগর স্টেশনের কাছে আপ ডায়মন্ড হারবার লোকালে কয়েক মিনিটের ওই ঘটনায় হকচকিয়ে যান যাত্রীরা। পরের স্টেশনে তাঁরাই ধাওয়া করে দুই দুষ্কৃতীকে ধরে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৪ ০১:২৫
Share:

যাত্রী সেজে উঠে চলন্ত ট্রেনের কামরায় এক প্রতিবন্ধী যুবককে কুপিয়ে খুন করে দেহ ছুড়ে বাইরে ফেলে দিল দুষ্কৃতীরা। শনিবার দুপুরে পূর্ব রেলের ডায়মন্ড হারবার-শিয়ালদহ শাখার গুরুদাসনগর স্টেশনের কাছে আপ ডায়মন্ড হারবার লোকালে কয়েক মিনিটের ওই ঘটনায় হকচকিয়ে যান যাত্রীরা। পরের স্টেশনে তাঁরাই ধাওয়া করে দুই দুষ্কৃতীকে ধরে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

Advertisement

রেল পুলিশ জানায়, নিহতের নাম কালো মোল্লা (৩০)। বাড়ি উস্তির বামনা গ্রামে। বছর দুয়েক আগে ওই গ্রামেই বসিরউদ্দিন খাঁ নামে এক ব্যক্তির খুনের ঘটনায় তিনি মূল অভিযুক্ত ছিলেন। এ দিন ধৃতদের মধ্যে এক জন বসিরউদ্দিনের ভাই আলাউদ্দিন। অন্য জন তার সহযোগী কুল্পিরকুন্ডে গ্রামের বাসিন্দা রহিম হালদার। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পুরনো সেই আক্রোশের জেরেই আলাউদ্দিন দলবল নিয়ে কালোকে খুন করে। কালোর পরিবারের লোকজন ওই দু’জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালের মে মাসে মগরাহাটের ইনায়েতপুর গ্রামের একটি মাঠ থেকে বামনা গ্রামের বাসিন্দা বসিরউদ্দিনের ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে। জমিজমা নিয়ে বিবাদের জেরেই কালো তাঁকে খুন করেন বলে অভিযোগ দায়ের হয় থানায়। এ দিন সকালে ডায়মন্ড হারবার আদালতে সেই মামলার শুনানিতে এসেছিলেন কালো। আদালত থেকে বেরিয়ে তিনি ডায়মন্ড হারবার স্টেশন থেকে ফেরার জন্য ১২.৪০ মিনিটের শিয়ালদহগামী ডায়মন্ড হারবার লোকাল ধরেন। ডায়মন্ড হারবারের পরের স্টেশন গুরুদাসনগর থেকে ট্রেনটি ছাড়ার পরেই কালো মোল্লার উপর চড়াও হয় তিন-চার জন দুষ্কৃতী। তাঁর ডান কানের পাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান কালো। এর পরে দেহটি দুষ্কৃতীরা ট্রেন থেকে ছুড়ে ফেলে দেয়। ট্রেনের কামরায় তখন অল্প যাত্রী ছিলেন। তাঁরা প্রথমে কেউই এগোতে সাহস করেননি।

Advertisement

গুরুদাসনগরের পরের স্টেশন বাসুলডাঙায় ট্রেন ঢুকতেই দুষ্কৃতীরা চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে পালাতে থাকে। ট্রেনের যাত্রীরা চিৎকার করে তাদের পিছু ধাওয়া করেন। প্ল্যাটফর্মের লোকজনও তাঁদের সঙ্গ নেন। প্ল্যাটফর্ম থেকেই আলাউদ্দিন এবং রহিমকে ধরে শুরু হয় গণপ্রহার। বাকি দুষ্কৃতীরা পালায়। বাসুলডাঙা স্টেশনের পাশেই রয়েছে ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ ক্যাম্প। ওই ক্যাম্পের পুলিশকর্মীরা এসে দু’জনকে জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে ডায়মন্ড হারবার হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে দু’জনকে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এ দিন দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রেললাইনের পাশেই চিৎ হয়ে কালোর দেহটি পড়ে রয়েছে। ঘাড়ে ও গলায় রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। তাঁর পরনে নীল লুঙ্গি, নস্যি রঙের হাফহাতা গেঞ্জি। দেহ ঘিরে আশপাশের গ্রামের মানুষের ভিড়। পুলিশ দেহটি তুলে ময়না-তদন্তে পাঠায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন