সন্দেশখালির পরে ভাঙনের তাণ্ডব এ বার আতাপুরে

সন্দেশখালির কালীনগরের পর এ বার মণিপুর পঞ্চায়েতের পশ্চিম আতাপুরের দাসপাড়ার পালা। শুক্রবার সকাল থেকেই রায়মঙ্গল নদীর বাঁধের অবস্থা রীতিমতো ভয়ঙ্কর আকার নেয়। রাতে বাঁধের ৭০ ফুট মতো ভেঙে গিয়ে দাসপাড়া-সহ আশপাশের মেছোভেড়িতে নোনা জল ঢোকে। ঘর-ছাড়া মানুষ আশ্রয় নেন রাস্তার উপর পলিথিনের নীচে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৪ ০২:২৯
Share:

সন্দেশখালির কালীনগরের পর এ বার মণিপুর পঞ্চায়েতের পশ্চিম আতাপুরের দাসপাড়ার পালা।

Advertisement

শুক্রবার সকাল থেকেই রায়মঙ্গল নদীর বাঁধের অবস্থা রীতিমতো ভয়ঙ্কর আকার নেয়। রাতে বাঁধের ৭০ ফুট মতো ভেঙে গিয়ে দাসপাড়া-সহ আশপাশের মেছোভেড়িতে নোনা জল ঢোকে। ঘর-ছাড়া মানুষ আশ্রয় নেন রাস্তার উপর পলিথিনের নীচে।

শনিবার সন্দেশখালি ২ ব্লকের বিডিও সোমনাথ দে-র উপস্থিতিতে এবং পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছিল। সুনীলকুমার পড়ুয়া নামে এক বাসিন্দা বলেন, “বর্তমানে জলের গতি কমার কারণে দাসপাড়ার বাঁধ মেরামতি হলেও আতাপুরের তালতলার একাধিক এলাকায় রায়মঙ্গল নদীর বাঁধের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। সামনে জল বাড়ার আগে মেরামতির কাজ করা না হলে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা ভাসার আশঙ্কায় বাসিন্দারা আতঙ্কিত।” ইতিমধ্যেই পরিস্থিতির শিকার সেখানকার ৩০-৩৫টি বাড়ির মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় করেছেন রাস্তার পলিথিনের ছাউনি। বসিরহাটের মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, “ভাঙন এলাকার দুর্গত মানুষের জন্য ত্রাণ বিলি জারি রয়েছে। প্রয়োজনে আরও ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।”

Advertisement

এ দিকে, সন্দেশখালি ১ ব্লকের কালীনগরের মসজিদ বাড়ি এলাকায় বেতনী নদীর বাঁধ মেরামতির কাজ আরম্ভ হলেও ত্রাণ নিয়ে চরম দলাদলি শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। শুক্রবার ওই এলাকাতে ত্রাণ নিয়ে গিয়েছিলেন বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিস আলি। দুর্গত মানুষের বক্তব্য, নদীর ধারের মানুষদের ত্রাণ দেওয়া হলেও একটু দূরের গ্রামের মধ্যে জলমগ্ন হয়ে যাঁদের অবস্থা ভয়াবহ, তাঁদের কেউ ত্রাণ দিচ্ছে না। দুগর্ত এলাকার কারও কারও দাবি, দলীয় কর্মীদের ছাড়া অন্যদের ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে না। পলিথিন না পাওয়ায় আনেক দুগর্তকেই বাচ্চাদের নিয়ে খোলা আকাশের নীচে কাটাতে হচ্ছে। সর্বত্র জলে ভরে যাওয়ায় উনুন জ্বালানোর মতো শুকনো কাঠও মিলছে না। এক রকম না খেয়ে কাটাতে হচ্ছে গরু, ছাগল-সহ গবাদি পশুদের, এমনই দাবি আরও অনেকের। ইদ্রিশ বলেন, “দ্রুত যাতে বাঁধ মেরামতির কাজ শেষ হয় এবং সকলেই যাতে ত্রাণ পান তা দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে বলা হয়েছে।”

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার গভীর রাতে সন্দেশখালি ১ ব্লকের কালীনগরের মসজিদ বাড়ি এলাকায় বেতনী নদীর বাঁধ প্রায় তিনশো ফুটের ওপর ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। জল যাওয়া আসা করায় ধীরে ধীরে সেই ভাঙনের মুখে বাড়ছে। এরই মধ্যে বাঁধের মেরামতি শেষ না হওয়ায় কালীনগর প্লাবিত হওয়ার পরে নোনা জল ঢুকতে শুরু করে দিয়েছে সেহেরা-রাধানগর এলাকার গ্রামগুলিতে। বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। নোনা জলে ঢুকে হাজার হাজার বিঘা সদ্য লাগানো ধান এবং পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় বড় রকম ক্ষতির মুখে পড়েছেন এক ফসলি ওই এলাকার মানুষ। বৃহস্পতিবার শমীক ভট্টাচার্য-সহ বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল কালীনগরের ভাঙন এলাকায় গেলে সেখানকার দুর্গত মানুষ ত্রাণ বন্টন নিয়ে দলাদলির অভিযোগ তোলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন