পরিষেবা দেখতে এসে সহকর্মীদের ঘেরাও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল বিএসএনএল-এর এক আধিকারিককে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বছরের বিশেষ বিশেষ দিনে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মোবাইল এবং ব্রডব্যান্ড পরিষেবা। এর ফলে গ্রাহকদের কাছে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে কর্মীদের। কেন বেসরকারি পরিষেবা সচল থাকলেও কোনও কারণ ছাড়াই সরকারি পরিষেবা বন্ধ থাকছে, সে বিষয়ে বার বার দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোন সুরাহা হচ্ছে না। এ সব প্রশ্নের মুখে প্রায় তিন ঘণ্টা ঘেরাও থাকেন বিএসএনএল-এর জেটিও ট্রাসমিশন প্রবীর ভঞ্জ।
এমন নজিরবিহীন ঘটনায় হতচকিত প্রবীরবাবু বলেন, “গত দু’দিন ধরে বসিরহাট মহকুমায় বিএসএনএল পরিষেবা বন্ধ থাকার কারণ জানতে এসেছিলাম। শুনলাম মালঞ্চের কাছে মাটির তলা দিয়ে যাওয়া অপটিক ফাইবার কেটে নিয়ে গেছে দুষ্কৃতীরা। মাঝখানে পড়ে কর্মীদের বিক্ষোভে হেনস্থা হতে হল। কেন বারে বারে অপটিক ফাইবার কাটা হচ্ছে এবং ঘেরাওয়ের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”
মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাটে প্রায়ই অপটিক ফাইবার চুরির কারণে মোবাইল, ব্রডব্যান্ড, ল্যান্ড লাইন পরিষেবা দুই-তিন দিন বা তারও বেশি দিন ধরে বন্ধ থাকে। এর ফলে সরকারি-বেসরকারি দফতর থেকে ব্যাঙ্কের পরিষেবা, সবই ব্যাহত হয়। ইন্টারনেট না থাকায় বড় রকম অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয় ছাত্রছাত্রীদের। অথচ বেসরকারি ক্ষেত্রে কিন্তু অপটিক ফাইবার চুরির বিশেষ অভিযোগ পাওয়া যায় না। পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তা হলে কি দুষ্কৃতীরা কেবল বেছে বেছে বিএসএনএল-এর তার চুরি করে? নাকি এর সঙ্গে অন্য বড় কোনও বিষয় জড়িয়ে আছে। বুধবার থেকে বিএসএনএল-এর সমস্ত পরিষেবা বন্ধ হওয়ার পর থেকে এই দাবি আরও জোরালো আকার নেয়।
এ দিন প্রবীরবাবু নির্ধারিত সময়ে থেকে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা দেরিতে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ দফতরে পৌঁছলে কর্মীরা তাঁকে ঘেরাও করেন। তাঁদের বক্তব্য, পরিষেবা বন্ধ থাকার কারণে বারবার গ্রাহকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়তে হলেও আধিকারিকেরা বিষয়টি নিয়ে ভাবিত নন। তা ছাড়া বিশেষ দিনে কী ভাবে এই মহকুমার কেবল সরকারি পরিষেবার তার চুরি যাচ্ছে, বিষয়টি তাঁদের কাছেও স্পষ্ট নয়। বিক্ষোভের মুখে তাঁকে দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ করেন প্রবীরবাবু।
বিএসএনএল এমপ্লয়িজের ব্রাঞ্জ সম্পাদক নিরঞ্জন সরকার বলেন, “মোবাইল পরিষেবা বন্ধ হলে আমাদের হেনস্থা করা হয়। অথচ কর্তারা দিব্যি থাকেন। বার বার তার চুরি হচ্ছে, অথচ পদস্থ কর্তাদের উদাসীনতায় এর স্থায়ী সমাধানেরও কোনও চেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে না। আর গ্রাহকেরা আমাদের ভুল বুঝছেন।”