RSS

বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে এক বছরে রাজ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ শাখা বেড়েছে, দাবি সঙ্ঘের

এই সংখ্যাটা ব্যাপক সংখ্যায় বেড়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলির উত্তরাংশ ও হাওড়া গ্রামীণ এলাকায়। এদিকে বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ শিবির। 

Advertisement

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৫৬
Share:

বাংলায় সঙ্ঘের শাখার সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ফাইল চিত্র।

বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে রাজ্যে ক্রমাগত কমেছে বিজেপির ভোট শতাংশ। শাসকের ‘সন্ত্রাস’-এর অভিযোগে ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে বহু পার্টি অফিসের। কিন্তু উল্টো ছবি আরএসএসের। সঙ্ঘের দাবি, এই সময়ের মধ্যে বাংলায় তাদের শাখার সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়েছে। তৃণমূল বিষয়টিকে আমল দিতে চায়নি। সিপিএম অবশ্য মনে করে, রাজ্যে তৃণমূলের জমানা থাকার ফলেই আরএসএস এতটা বেড়ে ওঠার রসদ পেয়েছে।

Advertisement

প্রতি বছর দীপাবলির আগে আরএসএসের বার্ষিক বৈঠক হয়। এ বছর ১৫-১৮ অক্টোবর প্রয়াগরাজে সেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সেই বৈঠকে বিভিন্ন রাজ্যে সঙ্ঘের সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট নেয় নাগপুর। সূত্রের খবর, গত এক বছরে সাংগঠনিক বিস্তারের যে চিত্র বাংলায় উঠে এসেছে তাতে খুশি সঙ্ঘ চালকরা। পাশাপাশি সামাজিক কাজের গতিও বেশ খানিকটা বেড়েছে। আরএসএসের পূর্ব ক্ষেত্র সঙ্ঘচালক অজয় নন্দী বলেন, “নির্দিষ্ট সংখ্যাটা আমরা দীপাবলি বৈঠকের পরই জানতে পারব। তবে শুধু শাখার সংখ্যাই রাজ্যে ২৫ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে সামাজিক কর্মসূচিগুলিও।” কারণ হিসেবে তাঁর দাবি, “আমাদের কাজকর্ম অনেক বেশি মাঠে ময়দানে। তাই অতিমারির কারণে আমাদের কিছু শাখা বন্ধ করে দিতে হয়েছিল। অনেকে বসে গিয়েছিলেন। এখন নতুন করে আমরা অনেক শাখা খুলেছি। অনেকে নতুন যোগ দিয়েছেন।”

অজয়বাবুর দাবি, রাজ্য জুড়েই এই বৃদ্ধি হয়েছে। তবে সূত্রের খবর, এই সংখ্যাটা ব্যাপক সংখ্যায় বেড়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলির উত্তরাংশ ও হাওড়া গ্রামীণ এলাকায়। এদিকে বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ শিবির।

Advertisement

যে হেতু বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। এই পরিস্থিতি বাংলায় সঙ্ঘের এমন উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি গ্রামীণ রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, গত পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ‘ইতিবাচক’ ফলাফলের পিছনে সঙ্ঘ এবং সমমনস্ক সংগঠনগুলির সক্রিয়তা ছিল বলে মনে করা হয়। যদিও সঙ্ঘের তরফে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, তাদের কাজ সারা বছরের। কবে কোন নির্বাচন আসছে, সেটা মাথায় রেখে তারা সঙ্ঘ পরিচালনা করে না। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “সঙ্ঘের একটা আদর্শগত প্রভাব রয়েছে। যার প্রভাব পরোক্ষ ভাবে রাজনীতিতে পড়ে। কিন্তু রাজ্যে আমাদের ভাল ফল করতে হলে আমাদের লড়াই-আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে হবে। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। না হলে সঙ্ঘ শক্তিশালী হলেও আমাদের লাভ হবে না।”

তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “বাড়া-কমা পুরোটাই ওদের বিষয়। শুধুই খাতায় কলমে বাড়লে তো হবে না। সক্রিয়তা রয়েছে কি না, দেখতে হবে। সিপিএমের ভোট বিজেপিতে যাচ্ছে। যদি সঙ্ঘ বেড়ে থাকে, সিপিএম ভেবে দেখুক কাদের থেকে শক্তি পেয়ে সংঘ বাড়ছে।” যদিও সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের মন্তব্য, ‘‘কুড়ি বছর আগে আরএসএস তৃণমূল নেত্রীকে ‘মা দুর্গা’ আখ্যা দিয়েছিল। আর তিনি আরএসএসকে ‘দেশপ্রেমিক’ বলেছিলেন। রাজ্যে ‘হার্মাদ’ সিপিএমকে বধ করতে ‘দুর্গা’র হাতে রসদও দিয়েছিল আরএসএস। এখন এত দিন পরেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আরএসএস ততটা খারাপ বলে তিনি বিশ্বাস করেন না! এর থেকেই পারস্পরিক নির্ভরতা ও ফায়দার (‘ক্যুইড প্রো কো’) ব্যাপারটা বোঝা যায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন