দিন পনেরো আগে চার আইপিএস অফিসারকে ‘কম্পালসারি ওয়েটিং’-এ (পদ নেই, কাজও নেই) পাঠানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তাঁদের নতুন পদ দিয়ে কাজে ফেরালো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেই সঙ্গেই বদলি করা হলো আরও ৬ আইপিএস অফিসারকে। সরকারি সূত্রের খবর, ১৯ মে বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত ছ’দফায় প্রায় ৫৫ জন আইপিএস অফিসারকে বদলি করল নবান্ন। এর বাইরেও রয়েছেন থানার ওসি পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের বহু পুলিশ অফিসার। তবে ‘শাস্তি’ হিসেবে ‘কম্পালসারি ওয়েটিং’-এ থাকা আরও দুই আইপিএস অফিসারকে এখনও কোনও পদ দেওয়া হয়নি।
এ দিন বদলির বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর পুলিশ প্রশাসনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। যে চার আইপিএস অফিসারকে এ দিন নতুন পদ দিয়ে কাজে ফিরিয়ে নেওয়া হল, মাত্র পনেরো দিনের জন্য কেন তাঁদের কম্পালসারি ওয়েটিং-এ পাঠানো হয়েছিল, তা নিয়ে সরব পুলিশের একাংশ। প্রশাসনের একটি অংশ অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে, কোনও অফিসারকে কম্পালসারি ওয়েটিং-এ পাঠানোর অর্থ, তাঁকে শিক্ষা দেওয়া। এটা হলে সেই অফিসারের সার্ভিস বুকে ‘কালো দাগ’ পড়ে।
যে দশ আইপিএস অফিসারের বদলির তালিকা এ দিন নবান্ন প্রকাশ করেছে, তাতে ‘কম্পালসারি ওয়েটিং’-এ থাকা চার অফিসার ধ্রুবজ্যোতি দে, সন্তোষ পাণ্ডে, সুমনজিৎ রায় ও রশিদ মুনির খানকে নতুন পদ দেওয়া হয়েছে। ধ্রুবজ্যোতিবাবুকে পাঠানো হয়েছে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার (জোন-২) পদে, সন্তোষ পাণ্ডেকে বিধাননগর কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার (জোন-১) পদে, সুমনজিৎ রায়কে হাওড়া কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার (উত্তর) পদে এবং রশিদ মুনির খানকে কমান্ড্যান্ট ইএফআর (দ্বিতীয় ব্যাটেলিয়ন) পদে। এঁদের মধ্যে প্রথম তিন জন ভোটের সময় ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পদে। রশিদ মুনির খান ছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার। এঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, কমিশনের নির্দেশ মেনে তাঁরা শিরদাঁড়া সোজা রেখে ভোটের কাজ করেছেন।
এ দিন বদলির তালিকায় থাকা বাকি আইপিএস অফিসারেরা হলেন, কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (৩) রাজীব মিশ্র। তাঁকে আইজি (পশ্চিমাঞ্চল) পদে পাঠানো হয়েছে। পদটি ফাঁকা ছিল। কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ওয়্যারলেস) সুজয় চন্দ্রের পদোন্নতি হয়েছে। তাঁকে যুগ্ম-কমিশনার (এস্ট্যাব্লিশমেন্ট) করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ডেপুটি কমিশনার (দক্ষিণ) নীলাদ্রি চক্রবর্তীকে রাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর (তৃতীয় ব্যাটেলিয়ন) কমান্ড্যান্ট পদে পাঠানো হয়েছে। তাঁর ছেড়ে যাওয়া পদে আইবি থেকে কল্যাণ মুখোপাধ্যায়কে পাঠিয়েছে নবান্ন। অন্য দিকে, হাওড়া কমিশনারেটের দুই ডেপুটি কমিশনার দেব্রবত দাস এবং রণেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদের অদলবদল ঘটিয়ে সেখানেই তাঁদের রাখা হয়েছে।