ছ’ বছরেও শেষ হল না জলপ্রকল্পের কাজ

আর্সেনিক ও জলবাহিত রোগের হাত থেকে রেহাই পেতে গঙ্গার জলকে পরিশোধন করে মধ্যমগ্রাম, বারাসত ও নিউ ব্যারাকপুরের পুর-অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল বছর ছয়েক আগে।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৩
Share:

আর্সেনিক ও জলবাহিত রোগের হাত থেকে রেহাই পেতে গঙ্গার জলকে পরিশোধন করে মধ্যমগ্রাম, বারাসত ও নিউ ব্যারাকপুরের পুর-অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল বছর ছয়েক আগে। তার পরেও এই তিনটি পুরসভার সব ওয়ার্ডে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছয়নি। যদিও শীঘ্রই বাকি ওয়ার্ডগুলিতে পানীয় জল পৌঁছে যাবে বলে তিনটি পুরসভার তরফেই আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

এই তিনটি পুর এলাকায় দীর্ঘদিন জলবাহিত বিভিন্ন রোগের প্রকোপে রয়েছে। আরও বড় সমস্যা হল আর্সেনিক। এই সমস্যা মেটাতেই ওই তিনটি পুরসভায় গঙ্গার জল পরিশোধন করে সরবরাহের চিন্তাভাবনা করা হয়। সেই মতো ‘জওহরলাল নেহরু আরবান রিনিউয়াল মিশন’-এ পলতা থেকে গঙ্গার জল টেনে এনে ওই তিন পুর এলাকায় দেওয়ার কাজ শুরু হয়।

তিনটি পুরসভা মিলিয়ে ৪৪৫ কোটি টাকার ওই প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের মুখে। এই টাকার বেশির ভাগটাই দিয়েছে কেন্দ্র। কিছুটা দিয়েছে রাজ্য আর বাকিটা এসেছে পুরসভাগুলির নিজস্ব তহবিল থেকে। পলতা থেকে গঙ্গার জল এনে পানিহার এলাকায় পরিশোধন করা হচ্ছে। ওই পরিশোধন কেন্দ্রটি ১৪০ মিলিয়ন লিটার জল পরিশোধনের ক্ষমতা রয়েছে। অন্য দিকে, তিনটি পুরসভা বেশ কয়েকটি জায়গায় তৈরি হয়েছে জলাধার। পাইপের মাধ্যমে পানিহারের সেই বিশুদ্ধ জল পৌঁছে যাচ্ছে এই জলাধারগুলিতে। সেখান থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে তা পৌঁছে যাচ্ছে বাড়িতে বাড়িতে। কিন্তু এখনও সব ওয়ার্ডে এই জল পৌঁছয়নি।

Advertisement

প্রায় বছর ছয়েক আগে এই জল সরবরাহের কাজে হাত দেওয়া হয়েছিল। এই কাজ শেষ হতে দেরি হচ্ছে কেন? প্রকল্পটি বড়। নানা দিকের মধ্যে সমন্বয়ের কাজটা করতে গিয়েই এতটা সময় লেগেছে বলে দাবি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ইঞ্জিনিয়ারদের। বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গঙ্গার জল টেনে এনে শোধন করে তা পাইপ লাইনে করে বিভিন্ন ওয়ার্ডে পৌঁছে দিতে হচ্ছে। কাজটা বড়। তা ছাড়া কখনও ৩৪ কিংবা ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের নীচ দিয়ে জলের পাইপ নিয়ে যেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হচ্ছে। এর জন্য অনুমতি পেতেই বেশ দেরি হয়ে গিয়েছে।’’ বারাসত পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২০টিরও বেশি ওয়ার্ডে ইতিমধ্যে পরিস্রুত জল পৌঁছে গিয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। ওই পুরসভার নতুনপুকুর, বাদু, কাজিপাড়া, গেঞ্জিমিল, মালঞ্চ এবং নবপল্লি এলাকায় ছ’টি জলাধার তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে একটি জলাধার নির্মাণের কাজ এখনও শেষ হয়নি। একটিতে এখনও জলের সংযোগ আসেনি। সেই কাজ হলেই সমস্যা মিটে যাবে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।

মধ্যমগ্রাম পুরসভার ২৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র তিনটিতে পরিস্রুত জল পৌঁছে দেওয়া যায়নি বলে জানা গিয়েছে। তবে পুরসভার চেয়ারম্যান রথীন ঘোষ বলেন, ‘‘দূর থেকে জল এনে তা শোধন করে দিতে গিয়েই এই দেরি। তবে কিছু দিনের মধ্যেই ওই তিনটি ওয়ার্ডেও জল পৌঁছে যাবে।’’ একই অবস্থা নিউ ব্যারাকপুর পুরসভাতেও। সেখানেও ২০টি ওয়ার্ডে জলের লাইনের সংযোগ দেওয়ার কাজ হয়ে গেলেও সব ক’টি ওয়ার্ডে পরিস্রুত জল পৌঁছে দেওয়া সম্ভাব হয়নি। চেয়ারম্যান তৃপ্তি মজুমদার বলেন, ‘‘কাজ চলছে। কিছু ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে গিয়েছে। বাকি ওয়ার্ডেও কিছু দিনের মধ্যে জল পৌঁছে যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement