—প্রতীকী ছবি।
বাড়ি গিয়ে ওষুধ দেওয়ার জন্য প্রায় ৫০ হাজার কর্মী রয়েছেন। রাজ্য জুড়ে রয়েছে প্রায় দু’হাজার সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র। হাসপাতালে যাতায়াতের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা থাকার কথা। তা সত্ত্বেও রাজ্যে প্রসূতি-স্বাস্থ্যের হাল উদ্বেগজনক বলে জানাচ্ছে কেন্দ্রের রিপোর্ট। অভিযোগ, সব থেকেও কাজের কাজ হচ্ছে না নজরদারির অভাবে।
‘ন্যাশনাল হেল্থ প্রোফাইল ২০১৮’-র রিপোর্ট জানাচ্ছে, রাজ্যের ৭১.৯ শতাংশ প্রসূতি আয়রন ও ফলিক অ্যাসিডের ট্যাবলেট পান না। সম্পূর্ণ চিকিৎসা পরিষেবা পান মাত্র ২১.৮ শতাংশ গর্ভবতী। স্ত্রীরোগ চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, এ দেশের মহিলাদের একটি বড় অংশ রক্তাল্পতায় ভোগেন। গর্ভাবস্থায় আয়রন ও ফলিক অ্যাসিডের ট্যাবলেট না-খেলে মা ও শিশুর অপুষ্টিতে ভোগার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই গর্ভাবস্থায় এই সব ট্যাবলেট প্রসূতির কাছে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।
ট্যাবলেট খাওয়ার পাশাপাশি প্রথম তিন মাসের মধ্যে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে গর্ভবতীর পরীক্ষা করানো জরুরি। ‘‘গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তখন গর্ভস্থ শিশুর মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ডের মতো অঙ্গ গঠন হয়,’’ বলেন স্ত্রীরোগ চিকিৎসক অভিনিবেশ চট্টোপাধ্যায়।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে যথেষ্ট পরিমাণে আয়রন ট্যাবলেট সরাবরাহ করা হয় না। প্রসূতি সময়মতো ওষুধ খাচ্ছেন কি না, সেটাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এই বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন নন। সরকারি তৎপরতা কতখানি, কেন্দ্রীয় রিপোর্ট সেই বিষয়েও প্রশ্ন তুলছে বলে জানান সজল বিশ্বাস, অর্জুন দাশগুপ্তের মতো চিকিৎসক-নেতারা।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী অবশ্য জানাচ্ছেন, গ্রামের তুলনায় শহরের প্রসূতিদের স্বাস্থ্য-পরিস্থিতি বেশি উদ্বেগজনক। ‘‘গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ানোর ব্যাপারে লাগাতার সচেতনতার কাজ চলছে। এই বিষয়ে অধিকাংশের অনীহা রয়েছে। তাই আচরণগত পরিবর্তনের জন্য নানা ধরনের কর্মশালারও আয়োজন করা হচ্ছে,’’ বলেন অজয়বাবু।