প্রতীকী ছবি।
আরও আট জনের মৃত্যু। শহরে দু’জন, জেলায় ছ’জন। সেটা ডেঙ্গি আর জ্বরেই। ডাক্তারি রিপোর্ট এবং পরিবারের বয়ান সে কথাই বলছে।
কলকাতার বুকে চেতলার এক শিশু, বিধাননগরের এক প্রৌঢ় এবং উত্তর চব্বিশ পরগনায় আরও ছ’জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে বুধবার।
এ দিন বেলা এগারোটা নাগাদ চিত্তরঞ্জন শিশুসদন হাসপাতালে চেতলার প্রীতম হালদার (১১) মারা যায়। তার বাবা মিঠুনবাবুর দাবি, শনিবার পুর ক্লিনিকে রক্ত পরীক্ষা করে প্রীতমের এনএস১ পজিটিভ মেলে। তাকে চিত্তরঞ্জন শিশুসদনে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ভর্তি করার দরকার নেই বলেছিলেন। পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে সোমবার তাকে ভর্তি করানো হয়। এ দিন হাসপাতাল থেকে ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি হেমারেজিক ফিভার লেখা হয়েছে।
রবিবার থেকে জ্বরে ভুগছিলেন আদিত্যপ্রসাদ বাগচী (৭৮)। মঙ্গলবার বিধাননগর পুর এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বৃদ্ধের রক্ত পরীক্ষা করে ডেঙ্গি ধরা পড়ে। ভিআইপি রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতাল শয্যা না থাকায় তাঁকে ফিরিয়ে দেয়। মঙ্গলবার রাতে দমদম পুর হাসপাতালে তিনি ভর্তি হন। বুধবার সকালে মারা যান।
আবার জ্বর গায়ে চার দিন হাসপাতালে থাকার পরে ছুটি পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলেই বাড়ি ফিরেছিল বসিরহাটের নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া পঞ্চায়েতের গোলাম মোস্তাফা গাজি (৬)। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শুরু হয় খিঁচুনি, শ্বাসকষ্ট। ফের বসিরহাট জেলা হাসপাতালে গেলে রাতে মারা যায় ছোট্ট ছেলেটি। তার রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল বলে জানাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার বাদুড়িয়ার পূর্ব বেনা গ্রামের ওহিদা বিবিও (৬২) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিন জন মারা গিয়েছেন বারাসত আর দেগঙ্গাতেও। বুধবার ভোরে বারাসতের চন্দনপুরের বাসিন্দা মতিয়ার রহমান (৩৫) মারা় যান। মঙ্গলবার রাতে দেগঙ্গার বেলপুরের বাসিন্দা মোস্তাকিন মণ্ডল (২৩) এবং মামুরাবাদের বাসিন্দা তাজমিরা বিবির (৩৮) মৃত্যু হয়েছে জ্বরে। অশোকনগর-কল্যাণগড় পুর এলাকার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কাকলি রায়কে (৩৫) সোমবার দুপুরে অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বুধবার মারা যান তিনি। সুপার সোমনাথ মণ্ডল জানান, তাঁর রক্তে এনএস-১ পজিটিভ ছিল।
এ দিন স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, ‘‘বুধবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬৮ জন। এই পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৯৫১১। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন ৩৬ জন।’’