প্রতীকী ছবি।
আরজিকরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। সেখান থেকে পাঠানো হয় এসএসকেএমে। কিন্তু কাগজপত্রে সই-সাবুদ করে চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগেই মারা গেল নবম শ্রেণির ছাত্র ইরফান আলি (১৫)। দেগঙ্গার সোহায় কুমারপুরের বাসিন্দা ইরফান পড়ত কুমারপুর পরশমণি হাইস্কুলে। শুক্র ও শনিবার জ্বরে মৃত্যু হয়েছে ইরফান-সহ দেগঙ্গার ৩ জনের। বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘‘দু’মাস ধরে এমন একটা দিন নেই, যে দিন কেউ না কেউ মারা যাচ্ছেন জ্বরে ভুগে।’’
বুধবার রাতে জ্বর আসে ইরফানের। রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য বেসরকারি ল্যাবে পাঠানো হয়। শুক্রবার রিপোর্টে এনএস-১ পজিটিভ আসে। ওই দিনই তাকে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে মোচড় দিয়ে পেটের যন্ত্রণা ও জ্বরের লক্ষণ দেখে কলকাতার আরজিকর হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসকেরা। সেখান থেকে রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। চিকিৎসা শুরুর আগেই সেখানে মারা যায় ছেলেটি।
ইরফানের বাবা সাবুর আলি বলেন, ‘‘চোখের সামনে তরতাজা ছেলেটা ক্রমশ নেতিয়ে পড়ছিল। চিকিৎসা শুরুর জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু কাগজপত্রে সই করতে করতেই সব শেষ।’’ তাঁর ক্ষোভ, বেসরকারি ল্যাবের রিপোর্টে ডেঙ্গির কথা বলা থাকলেও আরজিকরে রোগীকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ফেলে রেখে নতুন করে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। সে সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে হয় তো পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেত।
চৌরাশি পঞ্চায়েত শিমুলিয়া কর্মকারপাড়ার সন্ধ্যা বিশ্বাসের (৫৫) জ্বর আসে বুধবার। বিশ্বনাথপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রক্তের নমুনা পরীক্ষা হয়। শুক্রবার ভোরে অবস্থার অবনতি হলে বারাসত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। রাতে সেখানেই মারা যান সন্ধ্যা। তাঁর দিদি আলো দে বললেন, ‘‘রক্তের রিপোর্ট পাওয়ার আগেই চলে গেল বোন।’’
চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের দক্ষিণ রামনগর গ্রামের সেরিনা বিবির (৪০) দিন তিনেক ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। বেসরকারি ল্যাবের রিপোর্টে রক্তের ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল বলে দাবি পরিবারের। শনিবার ভোরে সেরিনার অবস্থা অবনতি হওয়ায় হাড়োয়া হাসপাতাল থেকে বারাসত জেলা হাসপাতালে আনা হয়। মিনিট পনেরোর মধ্যেই মারা যান তিনি।