গর্ব করে বলত, আমি সিলেটি

একই দিনে স্কুল শুরু হয়েছিল আমাদের। আমাদের নিয়ে সে দিনই যাত্রা শুরু হয়েছিল শিশুতীর্থের। পারিবারিক উদ্যোগে স্কুলটি গড়ে ওঠে। উদ্বোধনী দিনে ছাত্র বলতে স্রেফ আমরা দু’জন।

Advertisement

সৌমিত্রশঙ্কর চৌধুরী (লেখক কালিকাপ্রসাদের বন্ধু)

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৭ ০৪:০৪
Share:

শোকস্তব্ধ: রবীন্দ্র সদনে শায়িত কালিকাপ্রসাদের দেহ। পাশে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী ঋতচেতা ও পরিজনরা। মঙ্গলবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

একই দিনে স্কুল শুরু হয়েছিল আমাদের। আমাদের নিয়ে সে দিনই যাত্রা শুরু হয়েছিল শিশুতীর্থের। পারিবারিক উদ্যোগে স্কুলটি গড়ে ওঠে। উদ্বোধনী দিনে ছাত্র বলতে স্রেফ আমরা দু’জন।

Advertisement

কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য আমার বাবার মামাতো ভাই। সেই হিসেবে আমার কাকা। কিন্তু ‘বন্ধুকে’ ডাকতাম—প্রসাদ। ক্লাস ফাইভে আমরা নরসিং স্কুলে ভর্তি হই। মাধ্যমিকের পর প্রসাদ গুরুচরণ কলেজে। প্রসাদের এক কাকা মুকুন্দদাস ভট্টাচার্য ছিলেন নৃত্যগুরু। আর এক কাকা অনন্ত ভট্টাচার্য লোকগানের সংগ্রাহক। বাবা রামচন্দ্র ভট্টাচার্য ধ্রুপদী সঙ্গীতের শিল্পী ও পৃষ্ঠপোষক। প্রসাদ ঝরঝরে বাংলা লিখত। কলেজের বিতর্ক সভায় যোগ দিয়ে সকলের নজর কাড়ত। এসএফআই প্রার্থী হিসেবে লড়ে জিতেছিল। স্কুলজীবন হোক বা সেন্ট্রাল রোডের আড্ডা, আমাদের মধ্যমণি ছিল প্রসাদই। কলেজের পর প্রসাদ গেল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তুলনামূলক সাহিত্যে এমএ করতে।

সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে কয়েক বছর ধরে পরিচিতি লাভ করলেও প্রসাদ কিন্তু শুরুতে তবলা, খোল, ঢোলক বাজাত। শিলচরে তাঁর জুটি ছিল শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার। শুভদা গাইত, প্রসাদ বাজাত। তবে সঙ্গীত ভাবনার জায়গাটি ছিল একেবারে স্বচ্ছ। যাদবপুরে তার বিকাশ। রাজীব, বাবলু, উত্তমদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা। ‘দোহার’-এর জন্ম।

Advertisement

আরেকটা বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়। কলকাতায় গিয়ে অনেকেই যখন ‘সিলেটি’ পরিচয়ে অস্বস্তি বোধ করে, প্রসাদ সেখানে গর্বের সঙ্গে বলতেন, ‘‘আমি সিলেটি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন