Online Education

খুদেদেরও নিয়মিত পাঠ ই-পাঠশালায়

নদিয়ার শিক্ষকেরা অনলাইনে হোয়াটসঅ্যাপ লিঙ্কের মাধ্যমে ও ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে পড়াচ্ছেন প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২১ ০৫:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

‘তোমার লেখাটা ভাল হয়েছে। কিন্তু কোনও কিছু যখন কাটবে, তখন হিজিবিজি করে কাটবে না।’

Advertisement

‘স্যর, আমার অঙ্কের খাতাটা একটু দেখে দিন।’

‘তোমাদের যেটা পড়ালাম, বুঝতে কোনও অসুবিধা হল না তো?’

Advertisement

শিক্ষক-পড়ুয়ার কথোপথন। তবে ছবিটা কোনও শ্রেণিকক্ষের নয়। বস্তুত ছবিটা অদৃশ্যই! বা বলা চলে পাঠদানের শব্দচিত্র। নদিয়ার শিক্ষকেরা দেড় মাস ধরে অনলাইনে হোয়াটসঅ্যাপ লিঙ্কের মাধ্যমে ও ভয়েস মেসেজের মাধ্যমে পড়াচ্ছেন প্রাক্‌-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের। এই ‘ই-পাঠশালা’ শুধু নদিয়া জেলার ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেই আবদ্ধ নেই। নদিয়া ছাড়াও এমন পাঠশালায় পড়াশোনা করছে পূর্ব মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ জেলার বেশ কিছু খুদে পড়ুয়া।

গত ফেব্রুয়ারিতে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য স্কুল খোলা হলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে স্কুল ফের বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পঠনপাঠন যতটুকু যা চলছে, তা অনলাইনেই। একেবারে খুদেদের জন্য এই ই-স্কুলের প্রধান উদ্যোক্তা নদিয়ার কুলিয়া কালীতলা নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক সান্টু ভদ্র বললেন, “ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশের ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিছু অনলাইন ক্লাসের উদ্যোগ দেখা গিয়েছে। কিন্তু করোনা-কালে সব থেকে উপেক্ষিত প্রাথমিক স্তরের ছেলেমেয়েরা। তাই ওদের জন্য এই স্কুল।” সান্টুবাবু জানান, নদিয়ার পরে অন্যান্য জেলার শিক্ষকেরাও আস্তে আস্তে এই পাঠশালায় যুক্ত হয়েছেন। নিজেদের জেলার পড়ুয়াদের এই পাঠশালায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন তাঁরা।

স্কুলের শিক্ষক সত্যজিৎ দাস, সামিউল হক, মাহিরুল শেখরা জানান, রোজ সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয় এই পাঠশালা। সাধারণ পাঠশালার মতোই এখানে আলাদা আলাদা শ্রেণি ও সেকশন ভাগ করা হয়েছে। এক-একটি সেকশনে প্রতিটি বিষয়ের উপরে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। সেই গ্রুপেই হোয়াটসঅ্যাপ লিঙ্কের মাধ্যমে পাঠ দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত।

কী ভাবে চলছে পঠনপাঠন? ই-স্কুলের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, অঙ্কের শিক্ষক অঙ্ক করতে দিলেন। সেই অঙ্ক খাতায় কষে খাতার ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করে দিল পড়ুয়ারা। এই কাজে তাদের মা-বাবারা অবশ্যই সাহায্য করছেন।

তবে গ্রামাঞ্চলে এমন অনেক পড়ুয়া আছে, যাদের স্মার্টফোন নেই। “সে-ক্ষেত্রে আমরা যার কাছে স্মার্টফোন রয়েছে, তাকে বলেছি, বাড়ির আশপাশে যদি কোনও পড়ুয়ার স্মার্টফোন না-থাকে, তা হলে স্কুল চলাকালীন সেই পড়ুয়াকে ডেকে নিয়ে যেন একসঙ্গে একটি মোবাইল দিয়ে ক্লাস করা হয়। একই সঙ্গে বলেছি, অতিমারি চলছে, তাই দু’জনের বেশি পড়ুয়া যেন একটি স্মার্টফোন ব্যবহার না-করে,” বলেন সান্টুবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন