Communal harmony

ইদের নমাজ সেরে ‘বাবা’র শেষকৃত্যে মস্তক মুণ্ডন করলেন পূর্বস্থলীর মুজিবর

স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী হিসেবে কর্মজীবন শেষ করেন সমরেন্দ্র। পূর্বস্থলীর চুপির বাসিন্দা প্রাক্তন ওই স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। শনিবার তাঁর ‘ঘাট কামান’ ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:৫৫
Share:

শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন মুজিবর। নিজস্ব চিত্র

বাবার মতো ভালবাসতেন তিনি। আপদে বিপদে পাশে থাকতেন। তাই পিতৃসম সমরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের শেষকৃত্যে মস্তক মুণ্ডন করলেন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর কাষ্ঠশালীর বাসিন্দা মুজিবর শেখ। বছর পঁয়তাল্লিশের চাষি মুজিবরের দাবি, ‘‘উনি শিখিয়েছিলেন সবার উপরে মানুষ সত্য। সেটাই মেনে চলছি।’’

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী হিসেবে কর্মজীবন শেষ করেন সমরেন্দ্র। পূর্বস্থলীর চুপির বাসিন্দা প্রাক্তন ওই স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। শনিবার তাঁর ‘ঘাট কামান’ ছিল। সেখানে মস্তক মুণ্ডন করেন তাঁর দুই ছেলে অমিতাভ এবং অরুণাভ। তাঁদের সঙ্গেই ছিলেন মুজিবর। মন্ত্রোচ্চারণ করে শ্রাদ্ধের অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

অমিতাভ বলেন, ‘‘আমার বয়স প্রায় ৪৯ বছর। মুজিবর আমারও কাছাকাছি বয়সের। ছোট থেকেই আমাদের বাড়িতে ওঁর অবাধ যাতায়াত। একসঙ্গে পড়াশোনা, খেলাধুলা সব করেছি। বাবা ওঁকে আমাদের মতোই ভালবাসতেন। বাবাঅসুস্থ হওয়ার পরে মুজিবর সব সময় পাশে ছিল। শ্মশানেও গিয়েছিল।’’

Advertisement

শনিবার ইদের নমাজ পড়ে এসে মস্তক মুণ্ডন করে দুই ভাইয়ের সঙ্গে শ্রাদ্ধ, কামানের সব কাজ করেন মুজিবরও। অমিতাভর কথায়, ‘‘এ দেশে সাম্প্রদায়িক হানাহানির খবর শুনি। অথচ আমাদের আশপাশে মুজিবরের মতো মানুষও রয়েছে। মিলেমিশেই তো থাকার কথা।’’

আর মুজিবর বলেন, ‘‘অমিতাভ, অরুণাভর সঙ্গে একসঙ্গে মানুষ হয়েছি। এ বাড়ির ছেলের মতোই বড় হয়েছি। ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করা যায়, এমনটা দেখিনি কখনও। তাই বাবার মৃত্যুর পরে ঠিক করি, শেষকৃত্যের যাবতীয় অনুষ্ঠান হিন্দুশাস্ত্র মেনে পুত্রের মতোই পালন করব।’’ তিনি জানান, এমন কাজের জন্য কেউ কেউ বাঁকা কথা শুনিয়েছেন। তবে এ সবে কান দেননি তাঁরা।

পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘এই সব ঘটনা মানবতার জয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন