মহুয়ার ‘নির্দেশে’ ক্ষুব্ধ তৃণমূল বিধায়কের চিঠি মমতাকে

দলীয় সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটের পরই কৃষ্ণনগরে সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয় মহুয়াকে। সেই সূত্রেই নির্বাচন পরবর্তীতে সাংগঠনিক কর্মসূচি শুরু করেছেন এই তৃণমূল সাংসদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:০৮
Share:

মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ জানালেন তৃণমূলেরই এক বিধায়ক।—ফাইল চিত্র।

দল পরিচালনায় কর্পোরেট সংস্থার ভাষা কেন? কৃষ্ণনগরে তৃণমূলের সভাপতি মহুয়া মৈত্রের চিঠির ভাষায় ক্ষুব্ধ হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই অভিযোগ জানালেন দলের এক বিধায়ক। গোটা বিষয়টি নিয়ে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও চূড়ান্ত বিড়ম্বনায় পড়েছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মহুয়াকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

Advertisement

দলীয় সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটের পরই কৃষ্ণনগরে সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয় মহুয়াকে। সেই সূত্রেই নির্বাচন পরবর্তীতে সাংগঠনিক কর্মসূচি শুরু করেছেন এই তৃণমূল সাংসদ। কিন্তু সাংগঠনিক কাজের শুরুতেই বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন তিনি। দলীয় সূত্রে খবর, অগস্টে কৃষ্ণনগর লোকসভার অন্তর্গত দলের সব ব্লক সভাপতি ও অঞ্চল সভাপতিকে চিঠি লেখেন মহুয়া। তাতে সেপ্টেম্বর মাসে এই দুই স্তরে সাংগঠনিক বৈঠকের নির্দেশ দেন। তাতে ব্লক কমিটিগুলিকে বলা হয় ১ ও ১৬ সেপ্টেম্বর মধ্যে পঞ্চায়েত প্রধান, বুথ, জেলা পরিষদ ও অঞ্চল সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক সারতে হবে। একইভাবে অঞ্চল কমিটিকে বলা হয় ২ ও ১৭ সেপ্টেম্বর অঞ্চল কমিটির বৈঠক করতে হবে। এবং দুই বৈঠকের প্রস্তাব বা সিদ্ধান্ত নথিবদ্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ইংরেজিতে লেখা এই চিঠির শেষে ‘বাই অর্ডার।’ তার নীচে লেখা, মহুয়া মৈত্র। এই ভাষা নিয়েই ক্ষুব্ধ জেলা দলের নেতারা।

এই চিঠি নিয়ে জেলা নেতাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন অনেকেই। তবে আরও এক পা এগিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রীর কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন নাকাশিপাড়ার দলীয় বিধায়ক কল্লোল খাঁ। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে নাকাশিপাড়ার চারবারের বিধায়ক কল্লোলবাবু লিখেছেন, যে ভাষায় দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা তৃণমূলের রাজনৈতিক সংস্কৃতি নয়। এটা কর্পোরেট সংস্থার ভাষা। মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে প্রবীন বিধায়কের আক্ষেপ, দলনেত্রী হিসেবে মমতা নিজেও কখনও কর্মীদের সঙ্গে এই ভাষায় কথা বলেন না। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আন্তরিকতা থেকেই দল করেন। মহুয়ার পাঠানো চিঠির ভাষায় তাঁরা দুঃখিত ও লজ্জিত। মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো এই চিঠির কপি পাঠিয়েছেন জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও।

Advertisement

প্রসঙ্গত, কৃষ্ণনগর লোকসভা আসনে জয়ী হয়ে জেলায় তৃণমূলের মুখরক্ষা করেছিলেন মহুয়া। তবে নির্বাচনের আগে থেকেই তাঁর ব্যবহার নিয়ে দলের একাংশের ক্ষোভ ছিল। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের এড়িয়ে তিনি নিজস্ব ‘টিম’ নিয়ে কাজ করছেন বলে ভোটের আগেই দলনেত্রীর কাছে অভিযোগ করেছিলেন ওই নেতারা। এ ব্যাপারে কল্লোলবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূলকে পরিবার হিসেবেই গড়ে তুলেছেন দলনেত্রী। এইরকম চিঠি সেই পরিবারে বেমানান। নেত্রীকে তা জানিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন