Nabadwip

বৃদ্ধার দু’পায়ে ইট, পেটের উপরে পাথর, অভিযুক্ত বৌমা

স্থানীয়দের দাবি, বাড়িতে ঢুকে তাঁরা দেখেন, ঝর্না নিজের ঘরে শুয়ে ফোনে কথা বলছেন এবং বাড়ির পিছনের দিকে শৌচাগারের সামনে পড়ে আছেন বৃদ্ধা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৪ ০৭:১৭
Share:

সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া সেই ছবি। ছবি: প্রণব দেবনাথ।

শান বাঁধানো উঠোনে কাঁথার ওপর পড়ে আছেন এক বৃদ্ধা। হাত দুটো মাথার উপরে তুলে বাঁধা। দু’পায়ে দু’টি ইট চাপানো। তলপেটে চাপানো একটি চৌকো পাথর। যন্ত্রণায় চিৎকার করছেন বৃদ্ধা। মঙ্গলবার বিকেলে সমাজমাধ্যমে এমন ভিডিয়ো দেখে আঁতকে উঠেছিলেন সবাই (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার)। হইচই শুরু হয়ে যায় প্রাচীন মায়াপুর অঞ্চলে।

Advertisement

স্থানীয়দের অভিযোগ, অশীতিপর বকুলরানি দাসের উপর দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার চালিয়ে আসছেন বৌমা ঝর্না দাস। নবদ্বীপ পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতাপনগর শিমুলতলার বাসিন্দা ওই বৃদ্ধা থাকেন বৌমার তত্ত্বাবধানেই। ছেলে হৃষিকেশ দাস কাজের সূত্রে বাইরে থাকেন। এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, কেউ কিছু বলতে গেলে ঝর্না তাঁদের গালিগালাজ করতেন। শ্লীলতাহানির মামলা করবেন বলেও হুমকি দিতেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পরিস্থিতিতে বৃদ্ধাকে বাঁচাতে মঙ্গলবার বিকেলে গোপনে তাঁর ওই অবস্থার ছবি তোলেন কয়েক জন। ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হলে হইচই পড়ে যায়। এলাকার মহিলারা দল বেঁধে সন্ধ্যায় ওই বৃদ্ধার বাড়িতে যান। বিষয়টি জানতে পেরে সেখানে পৌঁছে যান ওই ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধিও। প্রতিবেশী তপন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বৃদ্ধার উপর এমন অত্যাচার বেশ কিছু দিন ধরেই চালাচ্ছেন ওঁর বৌমা। কিছু বলতে গেলে গালাগাল করতেন, মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখাতেন।’’

স্থানীয়দের দাবি, বাড়িতে ঢুকে তাঁরা দেখেন, ঝর্না নিজের ঘরে শুয়ে ফোনে কথা বলছেন এবং বাড়ির পিছনের দিকে শৌচাগারের সামনে পড়ে আছেন বৃদ্ধা। সেখান থেকে তাঁকে তুলে আনেন জবা সরকার বলে এক প্রতিবেশী। প্রথমে সব অস্বীকার করেন ঝর্না। ফের হুমকি দেন। এতে লোকজনদের খেপে উঠলে দাবি করেন, এক চিকিৎসকের কথা মতোই তিনি এমন কাজ করেছেন। এটা নাকি চিকিৎসারই পদ্ধতি। পুরপ্রতিনিধি ঝন্টুলাল দাস বলেন, ‘‘চিকিৎসকের নাম কিন্তু জানাতে পারেননি ঝর্না।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এমন অমানবিক
কাজের জন্য ওই মহিলার শাস্তি চাই।’’

Advertisement

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি ঝর্না। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের পর রেগে গিয়ে ঝর্না বকুলরানিকে বুধবার খেতে পর্যন্ত দেননি। এ দিন দুপুরে প্রতিবেশীরাই বৃদ্ধাকে চা-বিস্কুট দিয়ে আসেন। কথা বলতে গিয়ে দেখা গেল, প্রচণ্ড আতঙ্কে রয়েছেন বৃদ্ধা। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের না হলেও স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন