—ফাইল চিত্র।
ডেঙ্গির দাপটের মধ্যেই এ বার স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হল আলিপুরদুয়ারে। গোটা উত্তরবঙ্গে একমাত্র আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালেই এই রোগ নির্ধারণের ব্যবস্থা রয়েছে। তার পরেও বাঁচানো যায়নি কুমারগ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ দাসকে (৩২)। জেলার আরও পাঁচ জনের রক্তে এই রোগের জীবাণু মিলেছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মা জানান, স্ক্রাব টাইফাসের ওষুধ মিললেও বিভিন্ন অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়াতেই বাঁচানো যায়নি বিশ্বজিতকে। আলিপুরদুয়ারে শহরের বাবুপাড়া, দমনপুর, কুমারগ্রামের কয়েকজন ও কোকড়াঝাড়ের এক রোগীর শরীরে এই রোগের জীবাণু মিলেছে। তবে তারা প্রত্যেকেই সুস্থ রয়েছেন।
চিকিৎসকরা জানান, ছোট এই লাল পোকা কামড়ালে সেই জায়গায় পোড়ার মতো কালো দাগ হয়ে যায়। জ্বর, মাথা ব্যথা, মাংশপেশিতে ব্যথা, চোখ লাল হয়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। লক্ষণগুলি অনেকাংশে এনসেফেলাইটিসের লক্ষণের মতো। তবে এই রোগের ওষুধ সর্বত্র পাওয়া যায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে সমস্ত ব্লকের চিকিৎসকদের সর্তক করা হয়েছে। জ্বর হলেই ডেঙ্গির পাশাপাশি স্ক্রাব টাইফাস রয়েছে কি না তা দেখতে এলাইজা আইজিএম টেস্ট ফর স্ক্রাব টাইফাস করা হচ্ছে।
২০০৪ সালে পূরণ যখন কার্শিয়ঙে কর্মরত ছিলেন তখন প্রথম এই রোগে আক্রান্ত একজনের হদিস পেয়েছিলেন। ২০১৫ সালে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিসেবে আলিপুরদুয়ারে কাজে যোগ দেওয়ার পরেই এখানকার জেলা হাসপাতালে স্ক্রাব টাইফাস নির্ণয়ের ব্যবস্থা করেন তিনি। পূরণ বলেন, ‘‘চা বাগান ও জঙ্গল এলাকায় এই পোকার দাপট বেশি। বাড়িতে ছুঁচো-ইঁদুর থাকলেও এই রোগ হতে পারে। ২০১৫ সাল থেকেই স্ক্রাব টাইফাস নির্ণয়ের ব্যবস্থা চালু রয়েছে এখানে। তবে তা ধরা পড়ল চলতি বছরে। বিষয়টি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হয়েছে।’’
আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে সুপার চিন্ময় বর্মন জানান, দিন সাতেক আগে কুমারগ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। আত্মীয়রা জানিয়েছিলেন তারও সাত দিন আগে থেকে জ্বর ছিল তাঁর। হাসপাতালে আনার পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাঁকে। রবিবার মৃত্যু হয় বিশ্বজিতের।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে ডেঙ্গিতেও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে আলিপুরদুয়ারের রাঙালিবাজনায়। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাতশো।