আসতে পারেন অভিষেক

বলরামপুরে তৃণমূলের সভার ডাক

চলতি সপ্তাহে জেলায় সভা করতে আসার কথা যুব তৃণমূল সভাপতি তথা দলের পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দল সূত্রে খবর, সভাস্থল জঙ্গলমহলের বলরামপুর— গত পঞ্চায়েত ভোটে যে ব্লকের সব ক’টি গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের দু’টি আসনই হাতছাড়া হয়েছে শাসক দলের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৮ ০২:১১
Share:

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

চলতি সপ্তাহে জেলায় সভা করতে আসার কথা যুব তৃণমূল সভাপতি তথা দলের পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দল সূত্রে খবর, সভাস্থল জঙ্গলমহলের বলরামপুর— গত পঞ্চায়েত ভোটে যে ব্লকের সব ক’টি গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের দু’টি আসনই হাতছাড়া হয়েছে শাসক দলের। হেরে গিয়েছেন জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতোও। দল সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী ২৪ অগস্ট সেই বলরামপুরের রথতলা ময়দানে অভিষেকের সভা হবে।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটের ফল প্রকাশের পরে, গত ২৯ মে, সুপুরডি গ্রামের বাসিন্দা বিজেপির কর্মী ত্রিলোচন মাহাতোকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ তাঁর পরিবারের। ৩০ মে গ্রামের অদূরে খুঁদিগোড়ার জঙ্গলে গাছ থেকে ত্রিলোচনের ঝুলন্ত দেহ মেলে। ওই ঘটনার দু’দিন পরে, ২ জুন বলরামপুরেরই ডাভা গ্রামের বাইরে হাইটেনশন বিদ্যুতের খুঁটি থেকে বিজেপি কর্মী দুলাল কুমারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

ওই দু’টি ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়। সেই সময়ে বলরামপুরে এসেছিলেন বিজেপির অনেক রাজ্য নেতা। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সভা করেছেন বলরামপুরে। সিবিআই তদন্তের দাবিতে এখানেই ধর্নায় বসেছিলেন দলের রাজ্য নেতারা। অন্য দিকে, ভোটের ফল বেরনোর পরে বলরামপুরে সভা করেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো এবং দলের নেতা মদন মিত্র। এ ছাড়া শাসকদলের আর কোনও কর্মসূচি এত দিন হয়নি। এ বার অভিষেক আসছেন বলরামপুরে। কী বলেন তিনি, সে দিকেই তাকিয়ে জেলার বাসিন্দারা।

Advertisement

ইতিমধ্যেই দল ও পুলিশের তরফে সভাস্থল পরিদর্শনও করা হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিজেপি যে বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার করছে, তার বিরুদ্ধে আর অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে এই সভা হবে।’’ বলরামপুরে দলের আহ্বায়ক অঘোর হেমব্রম বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই সভা সফল করতে কর্মীদের তৎপরতা শুরু হয়েছে।’’

এ দিকে রবিবার শহরের একটি হোটেলে এই সভার প্রস্তুতি ও জেলার বিভিন্ন ব্লকে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি গঠন নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছিল তৃণমূল। উপস্থিত ছিলেন সাংসদ শান্তনু সেন, সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো, জেলার সাংসদ মৃগাঙ্ক মাহাতো, জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্য নেতারা। বৈঠকে শহরের বজরং দলের কয়েক জন নেতাকর্মীর তৃণমূলের যোগ দিতে এসেছিলেন। কিন্তু কিছুটা তাল কাটে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই ওই যোগদানপর্ব মেটার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই শান্তুনুর মোবাইলে একটি ফোন আসে। সূত্রের দাবি, তৃণমূলের পুরুলিয়া শহর কমিটির এক শীর্ষ নেতা ফোন করে অভিযোগ করেন, তাঁকে এড়িয়ে নতুনদের দলে যোগ দেওয়ানো হচ্ছে। এর পরেই শান্তনু বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। তাঁকে ফেরাতে সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের সাধারণ সম্পাদক নবেন্দু মাহালি, জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সুশান্ত মাহাতোরা গিয়েছিলেন। কিন্তু শান্তনু আর বৈঠকে ফিরে যাননি।

সাংসদের বৈঠক ছেড়ে চলে যাবার ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি শান্তিরাম মাহাতো। শান্তনুও বলেন, ‘‘আমি এই বিষয়ে কোনও কথা বলব না।’’ পরে বজরং দলের কর্মীরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে তিনি জানান। তাঁর বক্তব্য, বিজেপির বিভ্রান্তিমূলক প্রচারে ওই কর্মীরা বিভ্রান্ত হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর আদর্শে তৃণমূলে ফিরে এসেছেন। দলের শহর কমিটির সভাপতি বৈদ্যনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘কোনও বিতর্ক নেই। যে ভাবে দলে যোগদান হয়, সে ভাবেই বজরং দলের কর্মী-সমর্থকেরা আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন