ভগিনী নিবেদিতা
স্বামী বিবেকানন্দ বহু দিন ধরেই সঙ্ঘ পরিবারের আপন। পশ্চিমবঙ্গে ডালপালা ছড়াতে এ বার বিবেকানন্দের শিষ্যা ভগিনী নিবেদিতাকেও হাতিয়ার করছে তারা। নিবেদিতার ১৫০ বছর পূর্তির প্রাক্কালে তাঁর দর্শনকে সামনে রেখে ছাত্রী সম্মেলন করেছে আরএসএসের শিক্ষার্থী সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। বালুরঘাটে হয়ে যাওয়া ওই সম্মেলনে আলোচ্য ছিল— নারীশিক্ষা, নারীর স্বাবলম্বন ও সুরক্ষা। নিবেদিতার নামে বাঙালি আবেগকে উসকে দিয়ে এ রাজ্যে শাখাপ্রশাখা বিস্তারের জন্য এমন কৌশলী উদ্যোগ বলে সঙ্ঘ সূত্রের ব্যাখ্যা।
আগামী ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর হাতে এ রাজ্য থেকে বেশ কিছু আসন যে তুলে দিতে হবে, সেটা বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতারা ইতিমধ্যেই রাজ্য নেতৃত্বকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এ রাজ্যে নিজস্ব শক্তিতে সেই লক্ষ্য পূরণ করার মতো সংগঠন বিজেপি-র নেই। তাদের জন্য জমি তৈরির কাজটা করে দিতে হচ্ছে আরএসএসকেই। আর সঙ্ঘ সূত্রের মতে, কেশব ভবনের নেতারা বুঝেছেন, রাজ্যে সংগঠন বাড়াতে হলে মহিলাদের সম্পর্কে প্রাচীনপন্থী গোঁড়া মনোভাব দেখালে চলবে না। এই উপলব্ধি থেকেই নিবেদিতাকে সামনে রেখে ছাত্রী সম্মেলন এবিভিপি-র।
এবিভিপি-র রাজ্য ছাত্রী দেবশ্রী ভট্টাচার্য জানান, ওই সম্মেলনে বর্ধমান, গৌ়ড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়-সহ ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৫৫ জন ছাত্রী যোগ দেন। দেবশ্রীর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মহিলা হওয়া সত্ত্বেও এ রাজ্যে নারী নিগ্রহের সংখ্যা বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রীর বেশ কিছু মন্তব্যে দুষ্কৃতীদের সাহসও বেড়ে গিয়েছে। দেবশ্রী জানান, অবস্থা পরিবর্তন করতে তাঁরা ছাত্রীদের সংগঠিত করছেন।
এই কর্মসূচির পরে রবিবার সংগঠন বাড়ানোর কৌশল ঠিক করতে ডায়মন্ড হারবারে বিজেপি-ও বসেছে দু’দিনের চিন্তন বৈঠকে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘অন্য দল থেকে অনেকে আমাদের দলে আসছেন। পঞ্চায়েত ও লোকসভায় ভাল ফলের জন্য উপযুক্ত সৈনিক তৈরি করে সংগঠন মজবুত করাই এখন লক্ষ্য।’’
বিজেপি সূত্রের খবর, বিরোধীদের প্রচারের মোকাবিলা করতে নোট বাতিলের সুফলের দিকগুলি মানুষের কাছে তুলে ধরার বিষয়ে চিন্তন বৈঠকে আলোচনা হচ্ছে। রাজ্য বিজেপি-র পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এ দিনই হাওড়ায় বলেছেন, ‘‘নোট বাতিলে জালিয়াতেরা ধাক্কা খেয়েছে। তারা তৃণমূলের লোক! তাই তৃণমূল নেত্রী বিরোধিতা করছেন!’’