ভয়ে নাকি রয়েছে বাঘই!

পশ্চিম মেদিনীপুরের এক বনকর্তার কথায়, “বাঘ অনেকটাই ভীতু হয়ে পড়েছে। না হলে সামনে মানুষ দেখলে এ ভাবে পালাতো না!” বাঘ দেখেছেন বলে দাবি করেছিলেন ধেড়ুয়ার শিয়ারবনির লক্ষ্মী মাহাতো, বন্দিরাম মাহাতোরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ০১:২১
Share:

ফাইল চিত্র।

চেনা মেজাজে নেই ডোরাকাটা। নতুন জায়গায় এসে কিছুটা ভীতু হয়ে গিয়েছে সে। তার এই স্বভাব পরিবর্তনেই বিপাকে পড়ছেন বনকর্মীরা।

Advertisement

গোয়ালতোড়ের নয়াবসতের মহারাজপুরের জঙ্গলে বাঘ ধরার খাঁচা পাতা হয়েছে। সেই খাঁচার অদূরে বসে সুন্দরবন থেকে আসা দলের (ট্র্যাঙ্কুলাইজেশন টিম) এক সদস্য জানালেন, বাঘ ভয় পাওয়ায় এক জায়গায় বেশিদিন থাকছে না। তাই তাকে খাঁচাবন্দি করতে সমস্যা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘এ বাঘ সুন্দরবনের বাঘ নয়! সুন্দরবনের বাঘ কত দেখেছি। ধরেওছি। বাঘ কখনও এত ভয় ভয় থাকে না!” কেন এই পরিবর্তন? বাঘ ধরায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ওই বনকর্মীর কথায়, “এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। নতুন এলাকায় গেলে যে কেউ ভয়ে ভয়ে থাকবে। এ ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। বাঘ চেষ্টা করেও আগের জায়গায় ফিরে যেতে পারছে না। ফিরে যাওয়ার পথ খুঁজে পাচ্ছে না।”

সুন্দরবন থেকে আসা ওই দলের আরও এক সদস্যের মতে, বাঘটা যদি নিজের চেনা মেজাজে থাকত, তাহলে শুধু কামড়াতো না, কামড়ে মানুষ মেরে দিত। পশ্চিম মেদিনীপুরের এক বনকর্তার কথায়, “বাঘ অনেকটাই ভীতু হয়ে পড়েছে। না হলে সামনে মানুষ দেখলে এ ভাবে পালাতো না!” বাঘ দেখেছেন বলে দাবি করেছিলেন ধেড়ুয়ার শিয়ারবনির লক্ষ্মী মাহাতো, বন্দিরাম মাহাতোরা। একদিন সন্ধ্যায় ঘরের সামনে বাঁধা গরু-ছাগল খুলতে এসেছিলেন লক্ষ্মী। ঘর থেকে বেরোনোর পরে আঁতকে ওঠেন তিনি। ‘বাঘ বাঘ’ বলে চিত্কার জুড়ে দেন। লক্ষ্মীর কথায়, “একেবারে বাড়ির উঠোনের সামনে বাঘটা দাঁড়িয়েছিল। দেখে প্রচুর ভয় পেয়েছিলাম। তবে বাঘটাও যেন ভয় পেয়ে গিয়েছিল। গরু, ছাগল না-নিয়েই চলে যায়।”

Advertisement

বনকর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, এটি যেহেতু পূর্ণবয়স্ক রয়্যাল বেঙ্গল তাই সহজে ধরা দিচ্ছে না। বাঘ কি ফের লালগড়ে ফিরতে পারে? জেলার এক বনকর্তার কথায়, “বলা মুশকিল। তবে এটা ঠিক, লালগড়ের জঙ্গল মোটেই বাঘের জন্য নিরাপদ নয়। খাবারের জোগানও তেমন পর্যাপ্ত নয়। এই জঙ্গল বাঘের থাকার পরিবেশের সঙ্গে খাপও খায় না। দেখা যাক ও কী করে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন