সুরক্ষার দায়িত্ব নেবে স্কুলই

দিনের দীর্ঘ সময় অভিভাবকদের স্নেহচ্ছায়ার বাইরে যাদের স্কুলের চৌহদ্দিতে কাটাতে হয়, সেই শিশু ও কিশোর ছাত্রছাত্রীদের এত রকমের হাঁ-করা বিপদ থেকে বাঁচাবে কে?

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

তাদের কাছে সাক্ষাৎ-শমন হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্লু হোয়েল বা নীল তিমি। তাদের কাছে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়াও বড় বিপদ। অস্বাস্থ্যকর আবহে মিড-ডে মিল খাওয়ার ফলে দূষণ-দস্যুও তাদের জন্য জাল ফেলেই রেখেছে। সর্বোপরি এক শ্রেণির বাসকর্মীও যে তাদের কাছে রাক্ষস-সমান, প্রদ্যুম্ন ঠাকুরের হত্যাকাণ্ড তার প্রমাণ।

Advertisement

দিনের দীর্ঘ সময় অভিভাবকদের স্নেহচ্ছায়ার বাইরে যাদের স্কুলের চৌহদ্দিতে কাটাতে হয়, সেই শিশু ও কিশোর ছাত্রছাত্রীদের এত রকমের হাঁ-করা বিপদ থেকে বাঁচাবে কে?

রাজ্য সরকার বলছে, পড়ুয়াদের বাঁচাতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরই। পড়ুয়াদের বাঁচাতে হবে স্কুল-কর্তৃপক্ষকেই। নীল তিমির মতো সাইবার-ক্রীড়াপরাধ থেকে নিরস্ত করা, ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া থেকে বাঁচানো, মিড-ডে মিলের সূত্রে সংক্রমণ প্রতিরোধ, স্কুলের সঙ্গে যুক্ত লোকেদের যৌনবিকৃতির গ্রাস থেকে পড়ুয়াদের আগলে রাখার বন্দোবস্ত করতে হবে স্কুলকেই। ইতিমধ্যেই এই মর্মে স্কুলশিক্ষা দফতরের নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে রাজ্যের স্কুলে স্কুলে।

Advertisement

কী ভাবে বাঁচাবে স্কুল?

স্কুলশিক্ষা দফতর বলছে, সেই পথ স্কুল-পরিচালকদেরই খুঁজে বার করতে হবে। কেননা অভিভাবকেরা তাঁদের হাতে ছেলেমেয়েদের সঁপে দিয়ে সারা দিনের মতো নিশ্চিন্ত থাকেন। স্কুলশিক্ষা সচিব দুষ্মন্ত নারিয়ালার পাঠানো নির্দেশে বলা হয়েছে, পড়ুয়াদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার সামগ্রিক দায়িত্ব স্কুলের। পডুয়ারা স্কুলের কম্পিউটার ব্যবহার করতেই পারে। তবে তারা যাতে কোনও ভাবেই সাইবার অপরাধের শিকার হয়ে না-পড়ে, তা স্কুলকেই দেখতে হবে। নীল তিমির মতো মারণ খেলায় অনেক পড়ুয়াই আসক্ত হয়ে পড়ছে বলে অভিযোগ উঠছে। এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের মনের তার এমন সুরে বেঁধে দিতে হবে, যাতে তারা এই ধরনের বিপদ সম্পর্কে সচেতন হয়।

সাইবার অপরাধের কবল থেকে পড়ুয়াদের দূরে রাখার সঙ্গে সঙ্গে স্কুল-চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জঞ্জাল, জমা জল থেকে যাতে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ না-ছড়ায়, স্কুলকেই তা নিশ্চিত করতে হবে। কিছু দিন আগে সল্টলেকের বিডি স্কুলে গিয়ে অপরিচ্ছন্নতা দেখে সরব হয়েছিলেন স্কুলশিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিরা। তার জেরে প্রধান শিক্ষক সুকুমার চক্রবর্তীকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েও পরে শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপে পরে তা প্রত্যাহার করা হয়। সুকুমারবাবু শুক্রবার জানান, নতুন এই নির্দেশ তিনি পেয়েছেন। স্কুল-চত্বর পরিষ্কার রাখার সব রকম চেষ্টা করছেন তিনি।

স্কুল-চত্বর পরিচ্ছন্ন রাখতে উদ্যোগী হয়েছে গার্ডেনরিচ নুটবিহারী দাস গার্লস স্কুলও। প্রধান শিক্ষিকা সঙ্ঘমিত্রা ভট্টাচার্য জানান, সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে ছাত্রী এবং অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতা শিবিরেরও আয়োজন করছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন