ঘটনার দশ মাস পরেও চাঁইদের কয়েক জন অধরা। খাগড়াগড় কাণ্ডের সেই পলাতক পাণ্ডাদের ধরতে বাংলাদেশ সরকারের সাহায্য চাওয়া হয়েছে। মামলার প্রয়োজনীয় কিছু তথ্যপ্রমাণও চাওয়া হয়েছে বাংলাদেশের কাছে। খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলার সাপ্লিমেন্টারি (অতিরিক্ত) চার্জশিট বৃহস্পতিবার কলকাতা নগর দায়রা আদালতে পেশ করে এ কথা জানিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। এই পর্যায়ের চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসেবে ছ’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের সকলকেই বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন (ইউএপিএ) এবং বিস্ফোরক আইনে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এনআইএ ওই মামলায় প্রথম বার চার্জশিট দেয় গত ৩০ মার্চ। সেখানে ২১ জনের নাম ছিল। এনআইএ সূত্রের খবর, এর পর আরও একটি চার্জশিট দেওয়া হবে, সেখানেও পাঁচ-ছ’জনের নাম থাকতে পারে।
চার্জশিটে এনআইএ-র বক্তব্য, ২ অক্টোবর খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সূত্রে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়। জেএমবি প্রথমে পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও ঝাড়খণ্ডে ঘাঁটি গড়ে এবং পরে তা অন্য কয়েকটি রাজ্যে ছড়িয়েছিল। পরিকল্পনা মাফিক ও অত্যন্ত সংগঠিত ভাবে কিছু যুবককে সংগঠনে নিয়োগ করে তাদের মগজধোলাই ও জঙ্গি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে জেএমবি। বাছাই করা কয়েকটি মাদ্রাসা ছিল জঙ্গি প্রশিক্ষণের কেন্দ্র। যেখানে অস্ত্র ব্যবহার ও বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।
প্রথম বারের চার্জশিটেই এনআইএ দাবি করেছিল, ভারতের মাটিকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা ছিল জেএমবি-র লক্ষ্য।
এনআইএ-র আইনজীবী শ্যামল ঘোষ জানান, সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে যে ছ’জনের নাম রয়েছে, তাদের মধ্যে নদিয়ার পাগলাচণ্ডীর মতিউর রহমান শেখ, মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের লাল মহম্মদ ওরফে ইব্রাহিম শেখ এবং মুর্শিদাবাদের সমশেরগঞ্জের আব্দুল ওয়াহাব মোমিনকে গ্রেফতার করে এনআইএ। বাকি তিন জন— নদিয়ার থানারপাড়ার জহিরুল শেখ, বীরভূমের নানুরের মুস্তাফিজুর রহমান এবং ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জের এক তরুণীকে বিয়ের সূত্রে সেখানেই ঘাঁটি গেড়ে থাকা সন্দেহভাজন বাংলাদেশি সাদিক ওরফে সুমনকে ধরা যায়নি।
একই ভাবে এখনও অধরা হাতকাটা নাসিরুল্লা, কওসর, ইউসুফ শেখ, কদর কাজি, তালহা শেখ, বুরহান শেখের মতো জেএমবি-র মাথা কিংবা সক্রিয় সদস্যরা। যাদের ধরতে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের সাহায্য চেয়েছে এনআইএ।