দার্জিলিং ম্যালে পর্যটকদের ভিড়। ছবি: রবিন রাই।
রোদের দেখা মিললেও যানজটে শুক্রবার দিনভরই নাকাল হয়েছেন পর্যটকরা। কিন্তু শীর্ষ কর্তাদের হস্তক্ষেপে ধসে-বিধ্বস্ত শিলিগুড়ি-কালিম্পং সড়কে বাড়তি পুলিশকর্মী মোতায়েন হতেই অনেকটাই কমলো যানজট। ফলে শনিবার সকাল থেকে স্বস্তি ফিরল পর্যটকদের।
এ দিন শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পং যাতায়াতের ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিরিকধারায় পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ দেখা গিয়েছে। ফলে, সরু পাহাড়ি পথে কোনও গাড়ির চালক ‘ওভারটেক’ করে যানজট পাকানোর বিশেষ সাহস পাননি। উত্তরবঙ্গের ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন এতোয়ার কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনকে ধন্যবাদ। পর্যটকরা এখন স্বস্তিতে যাতায়াত করতে পারছেন। এই পদক্ষেপটাই দু’দিন আগে নিলে পর্যটকদের এতটা নাকাল হতে হত না।’’
দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি জানান, শুক্রবার কয়েকজন চালকই যানজট বাড়িয়ে তুলেছিলেন বলে অভিযোগ মিলেছে। তিনি বলেন, ‘‘যে সব এলাকায় গত দু’দিন ধরে যানজটের অভিযোগ এসেছে, সেখানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পূর্ত দফতরকেও দ্রুত রাস্তা থেকে ধস সরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল। জাতীয় সড়কের সর্বত্রই নজরদারি চলছে।’’
টানা বৃষ্টিতে গত মঙ্গলবার থেকে জাতীয় সড়ক জুড়েই ছোট-মাঝারি ধস নামে। বিরিকধারায় জাতীয় সড়কের বেশ কিছুটা অংশ বসে যায়। ধসের কারণে বিভিন্ন রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। পাকদণ্ডি পথে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক যানজট। বৃষ্টির পরে শুক্রবার রোদ ঝলমলে আবহাওয়া থাকলেও যানজটে চূড়ান্ত নাকাল হতে হয় পর্যটকদের। অভিযোগ, পুলিশি নজরদারি না থাকায় পাহাড়ি রাস্তায় নিয়ম ভেঙে গাড়ির একাধিক লাইন তৈরি হয়ে যায়। তাতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় পর্যটকদের। সকাল বেলায় গ্যাংটক থেকে রওনা দিয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছতে গভীর রাত হয়ে যায় অনেকেরই। তৈরি হয় ক্ষোভ। অভিযোগ পৌঁছয় রাজ্য পুলিশের এডি়জি তথা আইজি (উত্তরবঙ্গ) এন রমেশবাবুর কাছেও। তিনি দ্রুত বাড়তি ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের নির্দেশ দেন। দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘যানজট নিয়ে নতুন করে আর কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’’
এ দিনই গ্যাংটক থেকে শিলিগুড়িতে ফিরেছেন নিকিতা অগ্রবাল। যানজটের কথা শুনে ভোরবেলায় রওনা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার যানজটে আটকে অনেকে ট্রেন ধরতে পারেনি বলে শুনেছিলাম। তাই কোনও ঝুঁকি নিইনি। তবে আজকে আমাদের রাস্তায় কোথাও দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হয়নি।’’ এ দিন নতুন করে কোথাও ধসের খবর মেলেনি বলেও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।