অনেক ক্ষেত্রেই কর্তাব্যক্তিদের হয়ে বিভিন্ন নথিপত্রে সই করে দেন অধস্তন অফিসারেরা। তাতে বিভিন্ন সময়ে বিভ্রান্তি ও সমস্যা দেখা দেয়। তাই নথিপত্রে সই করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। তবে পুলিশ-প্রশাসনের অন্দরের খবর, আপাতত এই বার্তা দেওয়া হয়েছে শুধু রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারের উদ্দেশেই।
সংশ্লিষ্ট নির্দেশে বলা হয়েছে, রাজ্য পুলিশের ডিজি বা কলকাতার পুলিশ কমিশনারের পরিবর্তে তাঁদের মনোনীত অধস্তন কোনও অফিসার কোনও নথিতে সই করলে তার সঙ্গে সংবাক্ষরকারীর নাম এবং পদের উল্লেখ করতে হবে। যাতে বোঝা যায়, কোন পদের কোন অফিসার রাজ্য পুলিশের ডিজি অথবা কলকাতার পুলিশ কমিশনারের হয়ে নথিতে সই করছেন। তা হলে পরবর্তী কালে প্রশাসন প্রয়োজনে সেই অফিসারকে সহজেই চিহ্নিত করতে পারে।
প্রশাসনিক সূত্রের ব্যাখ্যা, শীর্ষ পদের অফিসারেরা কোনও কোনও সময়ে বিভিন্ন নির্দেশিকা অথবা নথি কার্যকর করেন, যেখানে তাঁরা নিজেরা সই করেন না। তাঁদের পরিবর্তে সেখানে অন্য কারও সই থাকে। অথচ সংশ্লিষ্ট নথি পরিচিতি পায় সেই শীর্ষ অফিসারের নামে। হয়তো তথাকথিত ‘রুটিন’ সেই নথির ব্যাপারটা শীর্ষ কর্তাদের সে-ভাবে খেয়ালেও থাকে না। প্রশাসনিক রীতিতে এই পদ্ধতি সিদ্ধ হলেও পরে তাকে ঘিরে কোনও বিতর্কের সৃষ্টি হয়, সমস্যা দেখা দেয়। অথবা ব্যাখ্যার প্রয়োজন হলে দায়বদ্ধ হয়ে যান সংশ্লিষ্ট শীর্ষ অফিসারেরা। পরবর্তী পর্যায়ে যথাযথ ব্যাখ্যা পেতেও সমস্যা হয়। এই অবস্থায় শীর্ষ কর্তাদের হয়ে যিনি সই করছেন, তাঁর নাম এবং পদের পরিচয় জানা থাকলে প্রয়োজনে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য তাঁকেই নির্দেশ দেওয়া যেতে পারে। পুলিশ-প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘পদ্ধতি আরও স্বচ্ছ এবং সরল করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পুলিশ মহলের একটি অংশের ব্যাখ্যা, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার আইনশৃঙ্খলা এবং বাহিনীর সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছেন। খরচখরচা, নতুন সিদ্ধান্তগ্রহণ-সহ তাঁদের সব ধরনের পদক্ষেপ মূলত বাহিনীকে কেন্দ্র করেই। ফলে সেই সংক্রান্ত যে-কোনও নথিপত্রে ডিজি বা পুলিশ কমিশনারের অনুমোদন থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, নথি কার্যকর হলেও তাতে সংশ্লিষ্টদের অনুমোদন নেওয়া হয়নি। এটা প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে, আবার বৃহত্তর ক্ষেত্রে সরকারকেও ফেলতে পারে বিড়ম্বনায়। এক কর্তা বলেন, ‘‘বছর চারেক আগে এই পদ্ধতি এক বার চালু হয়েছিল। তার পর থেকে অনেকেই এই রীতি মেনে নিজেকে চিহ্নিত করে নথিতে সই করেন। কিন্তু অনেকে আবার তা মেনে চলছেন না। তাই ফের এই নির্দেশ দিতে হয়েছে।’’