প্রশাসনিক জটে বেহাল গবেষণা, নালিশ কুটা-র

গবেষণা প্রকল্পের যন্ত্রপাতি কেনা থেকে ভেন্ডারের বকেয়া বিল মেটানো পর্যন্ত কোনও ক্ষেত্রেই প্রশাসনের সহায়তা মিলছে না বলে অভিযোগ জানাল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন কুটা। এর জেরে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে অসুবিধা তো হচ্ছেই। এমনকী কয়েকশো কোটি টাকার আন্তর্জাতিক অনুদানও ফিরে গিয়েছে বলে অভিয়োগ কুটা নেতৃত্বের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১৬
Share:

গবেষণা প্রকল্পের যন্ত্রপাতি কেনা থেকে ভেন্ডারের বকেয়া বিল মেটানো পর্যন্ত কোনও ক্ষেত্রেই প্রশাসনের সহায়তা মিলছে না বলে অভিযোগ জানাল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন কুটা। এর জেরে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে অসুবিধা তো হচ্ছেই। এমনকী কয়েকশো কোটি টাকার আন্তর্জাতিক অনুদানও ফিরে গিয়েছে বলে অভিয়োগ কুটা নেতৃত্বের।

Advertisement

এ ক্ষেত্রে অভিযোগকারীদের আঙুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (অর্থ) সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সোনালীদেবী অবশ্য এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

এই ব্যাপারে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের কাছে একটি স্মারকলিপি দেন কুটা-র সদস্যেরা। তাতে গবেষণা ও পঠনপাঠনে আর্থিক সমস্যা তৈরির সঙ্গে সঙ্গে সোনালীদেবীর বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারেরও অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। কুটা-র সদস্য, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক পার্থিব বসু বলেন, ‘‘আমি শিক্ষক। পড়াশোনা, গবেষণাই আমার কাজ। কিন্তু যদি প্রশাসনিক কাজকর্মের জন্য টেবিলে টেবিলে ঘুরে বেড়াতে হয়, গবেষণার কাজ করব কখন? এ-রকম চলতে থাকলে তো শেষ পর্যন্ত সব প্রকল্পের কাজ ফিরিয়ে দেওয়া ছাড়া গতি থাকবে না। আর নিজেও কত দিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকব, সেটা ভেবে দেখতে হবে।’’ অর্থাৎ শিক্ষক শিবির এতটাই ক্ষুব্ধ যে, বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে যাওয়ার কথাও ভাবছেন কেউ কেউ।

Advertisement

জৈব পদার্থবিদ্যার শিক্ষক শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, প্রশাসনিক অসহযোগিতার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকশো কোটি টাকার আন্তর্জাতিক অনুদান হারিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসার দীর্ঘদিন ধরে সাসপেন্ড হয়ে আছেন। তার জেরেই কি এই জটিলতা?

কুটা-র সম্পাদক দিব্যেন্দু পাল বলেন, ‘‘সেটা তো বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপার। কিন্তু আর্থিক বিভাগের মাথায় যিনি বসে আছেন, তিনিও তো নানা ভাবে অসহযোগিতা করছেন!’’

উপাচার্য সুরঞ্জনবাবু অবশ্য এই সমস্যা নিয়ে এ দিন কোনও কথাই বলতে চাননি। তবে কুটা-র স্মারকলিপি যে জমা পড়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।

আর সোনালীদেবী বলেন, ‘‘আর্থিক শৃঙ্খলা ফেরানোই আমাদের লক্ষ্য। উৎকর্ষ ও নিয়মের সমন্বয় সাধনই আমাদের উদ্দেশ্য। সুনির্দিষ্ট পথে পঠনপাঠনের চর্চাকে আমরা যথাসাধ্য সহায়তা দেব।’’

তা হলে কি তিনি কুটা-র সদস্যদের বিরুদ্ধে নিয়ম না-মানার পাল্টা অভিযোগ জানাচ্ছেন?

‘‘এ ব্যাপারে কিছু বলব না,’’ জবাব সহ-উপাচার্য (অর্থ)-এর।

এ দিনই ফিনান্স অফিসারের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে পেশ করা হয়। সিন্ডিকেটে সেটি গৃহীত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, রিপোর্টে ওই অফিসারের বিরুদ্ধে নিয়ম না-মানার অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে রিপোর্টে। বিশ্ববিদ্যালয় এ বার সে-পথেই এগোবে বলে ওই সূত্রে জানানো হয়েছে। তবে এই বিষয়ে কোনও কর্তা সরকারি ভাবে মুখ খুলতে চাননি।

আর অভিযুক্ত অর্থ-অফিসারের দাবি, তিনি বেআইনি কিছুই করেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন