তৃণমূল সরকারের হয়ে মামলা লড়তে শহরে এসে ফের নিজের দলের কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল এ রাজ্য থেকে নির্বাচিত রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের পক্ষে পঞ্চায়েত মামলায় সওয়াল করায় কলকাতায় বিক্ষোভ হয়েছিল তাঁকে ঘিরে। এ বার বিজেপির রথযাত্রা সংক্রান্ত মামলায় আইনজীবীর ভূমিকা পালন করতে গিয়ে একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলেন তিনি। ক্ষুব্ধ সিঙ্ঘভি অবশ্য জানিয়েছেন, পেশাগত ভাবে কাদের হয়ে মামলা লড়বেন, তা নিয়ে ‘অবাঞ্ছিত’ কোনও পরামর্শ তিনি নেবেন না!
কলকাতা হাইকোর্টের ‘ডি’ গেটের বাইরে শুক্রবার সিঙ্ঘভিকে ঘিরে আইনজীবীদের কালো গাউন উড়িয়ে অভিনব কায়দায় বিক্ষোভ দেখান প্রদেশ কংগ্রেসের আইন, মানবাধিকার ও তথ্যের অধিকার শাখার কর্মীরা। নেতৃত্বে ছিলেন কংগ্রেসের আইনজীবী-নেতা ঋজু ঘোষাল। তাঁদের ক্ষোভ, রাজ্য থেকে নির্বাচিত সাংসদ হয়েও বাংলার কংগ্রেস কর্মীদের ভাবাবেগকে বারবার আঘাত করছেন সিঙ্ঘভি। ঋজুদের অভিযোগ, তৃণমূলের জন্যই রাজ্যে এক দিকে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে। আবার অন্য দিকে তৃণমূলের হাতে কংগ্রেস কর্মীরা আক্রান্ত, ভাঙানো হচ্ছে নেতা-বিধায়কদের। অথচ সেই তৃণমূল সরকারের হয়েই একের পর এক মামলায় সওয়াল করে যাচ্ছেন কংগ্রেস সাংসদ!
পরে বিধান ভবনে গিয়ে এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘আইনজীবী হিসেবে কোন মামলা নেব বা নেব না, তা-ই নিয়ে অবাঞ্ছিত কোনও জায়গা থেকে উপদেশ চাই না। বিজেপি একটা কর্মসূচির পরিকল্পনা করেছে, যার উদ্দেশ্য খুবই প্ররোচনামূলক। রাজ্য পুলিশের এডি়জি-র পক্ষে আদালতে দাঁড়িয়ে সেই পরিকল্পনার বিরোধিতা করার জন্য যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁরা কংগ্রেসেরই অবমাননা করছেন।’’ তিনি কি দলকে জানিয়ে মামলা লড়ছেন? দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ সিঙ্ঘভি পাশে বসা বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, অমিতাভ চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সরকারদের দেখিয়ে পাল্টা বলেন, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতরে বসে আছি। দলের শীর্ষ নেতারা আছেন। কেউ তো কিছু বলেননি। আমি জানি, কংগ্রেসের একটা অংশ বারবার এই কাজ করছে!’’ বিক্ষোভের আশঙ্কায় এ দিন বিধান ভবনেও সিঙ্ঘভি থাকার সময়ে বিপুল পুলিশি বন্দোবস্ত রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: নেহরু-রাহুলদের গুণ গেয়েই মমতার নবান্নে ফারুক