রক্তশূন্য কলকাতায় নেতা বাছতে ভোট

পুরসভার ভোটে শাসক বাহিনীর দাপটের সামনে রুখে দাঁড়ানোর লোক নেই। সাকুল্যে ভোটপ্রাপ্তি কমবেশি ১৫%! সেই কলকাতা জেলা সিপিএমেই কমিটি এবং সম্পাদক বাছতে তুলকালাম!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:১২
Share:

বিধানসভায় একটি আসনও নেই। লোকসভার আসনন আগেই হাতছাড়া। পুরসভার ভোটে শাসক বাহিনীর দাপটের সামনে রুখে দাঁড়ানোর লোক নেই। সাকুল্যে ভোটপ্রাপ্তি কমবেশি ১৫%! সেই কলকাতা জেলা সিপিএমেই কমিটি এবং সম্পাদক বাছতে তুলকালাম!

Advertisement

নতুন জেলা কমিটি এবং জেলা সম্পাদক বেছে নেওয়ার জন্য সম্মেলনের শেষ দিন ভোটাভুটি হল কলকাতায়। প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত চারটি টেবিলে ভোটের গণনা চলছে। জেলা সম্পাদক পদে প্রাক্তন মন্ত্রী মানব মুখোপাধ্যায় এবং কট্টরপন্থী নেতা কল্লোল মজুমদারের সম্মুখ সমর! গত বার সম্মেলনে বিবদমান গোষ্ঠীর মধ্যে মীমাংসা করতে না পেরেই জেলা সম্পাদক করা হয়েছিল বর্ষীয়ান নেতা নিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে। এ বার সম্পাদক বদলে আগেই সায় দিয়েছে আলিমুদ্দিন। কিন্তু কে হবেন নতুন সম্পাদক, তা-ই নিয়েই বিবাদ বেধেছে সম্মেলনে। এ বার কলকাতাই সিপিএমের প্রথম জেলা, যেখানে সম্মেলন গড়াল ভোটাভুটি পর্যন্ত!

ভোটে শোচনীয় ফল করলেও কলকাতায় সিপিএমের যে কোনও কর্মসূচি বা প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে থাকেন তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সংগ্রাম চট্টোপাধ্যায়েরা। এ বার তরুণবাবুকেই জেলা সম্পাদক দেখতে চেয়েছিল দলের একাংশ। সিপিএম সূত্রের খবর, সুদীপ্ত সেনগুপ্তদের তাতে আপত্তি ছিল। সেখানেই বিরোধের সূত্রপাত। এর মধ্যেই আসরে নামেন মানববাবু। দলের একটি সূত্রের খবর, রাজ্য নেতাদের উপস্থিতিতে কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীকে বেলেঘাটার নেতা মানববাবু এমনও জানিয়ে দেন যে, এ বারও জেলার ভার না পেলে নিজের ভবিষ্যৎ ভেবে দেখতে হবে!

Advertisement

জেলা সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গিয়েছেন বুঝে কল্লোলবাবুরা শেষমেশ ভোটাভুটি চাইছিলেন না। কিন্তু দলের একাংশের চাপে তরুণ-সংগ্রামদের অনুগামী এমন কয়েক জনকে বাদ দিয়ে নতুন জেলা কমিটির প্যানেল তৈরি করা হয়, যা মানতে পারেননি অনেকেই। তার পর অনিবার্য হয়ে ওঠে ভোটাভুটি। মোট ৩৯৩ জন প্রতিনিধির সামনে এ দিন সন্ধ্যায় পেশ করা হয় ৬০ জনের প্যানেল। আলাদা করে জমা পড়ে আরও ৭-৮ জনের নাম। দলীয় সূত্রের বক্তব্য, মনোনয়ন জমা দিয়ে ব্যালট তৈরি করে ভোট নিয়ে তা গুনতে হচ্ছে। তাই ফল ঘোষণা হতে সময় লাগছে।

রুদ্ধশ্বাস এমন অপেক্ষার আগে দু’দিন ধরে জেলা সম্মেলনে প্রবল বিতর্ক হয়েছে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের প্রশ্নে। কংগ্রেসের সমর্থনে রাজ্য থেকে সীতারাম ইয়েচুরিকে রাজ্যসভায় ফের না পাঠানো বা কেন্দ্রীয় কমিটিতে সম্প্রতি ভোটাভুটি করে ধর্মনিরপেক্ষ জোট গড়ার লাইন খারিজ করা— সব কিছু নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে সম্মেলনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন