হিঙ্গলগঞ্জে দলের কর্মীদের সঙ্গে বাদানুবাদ কৃষিমন্ত্রীর।—নিজস্ব চিত্র।
মঞ্চে দাঁড়িয়ে মাইক হাতে উত্তেজিত ভাবে দলের কর্মীদের শাসাচ্ছেন মন্ত্রী। বলছেন, পুলিশ ডেকে সকলকে বের করে দেবেন। মঞ্চের নীচ থেকে তখন তাঁকে লক্ষ্য করে উড়ে আসছে গালিগালাজ।
শুক্রবার হিঙ্গলগঞ্জে সরকারি অনুষ্ঠানে এসে এমনই অস্বস্তির সামনে পড়লেন কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। জেলা পরিষদের স্থানীয় তৃণমূল সদস্য-সহ দলের স্থানীয় নেতৃত্বকে কেন ডাকা হয়নি অনুষ্ঠানে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কর্মী-সমর্থকেরা। জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য অনুষ্ঠানে ডাক না পেলেও জেলা পরিষদ স্থানীয় সিপিএম সদস্যের জন্য কিন্তু আসন সংরক্ষিত ছিল। যা দেখে উত্তেজনা আরও বাড়ে। ব্লক কৃষি দফতরের ভবন উদ্বোধনের এই অনুষ্ঠান নিয়ে কেন সরকারি স্তরে প্রচার হয়নি, তা নিয়েও ক্ষোভ দেখান অনেকে। মঞ্চের সামনে যে চেয়ারের সারি পাতা হয়েছিল, তাতে শুরুতেই ছিল লাল চেয়ার। অভিযোগ, সবই বরাদ্দ ছিল সিপিএম নেতাদের নামে। দ্বিতীয় সারিতে সাদা চেয়ার এবং তৃতীয় সারিতে রাখা হয়েছিল তৃণমূলের সবুজ চেয়ারের সারি। চেয়ারের এমন বিন্যাসের জেরেও উত্তেজিত হয়ে পড়েন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ।
গোলমাল চলাকালীন বেশ কিছুক্ষণ মঞ্চে চুপচাপ বসেছিলেন মন্ত্রী। এক সময়ে পূর্ণেন্দুবাবুর ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। মাইক হাতে মন্ত্রী বলেন, ‘‘সরকারি কাজে বাধা দিলে কী হয় জানেন? এরপরেও চিৎকার করলে পুলিশকে বলব, এখান থেকে বার করে দিতে।’’
যা শুনে তে তে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। সভা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে তাঁদের বলতে শোনা যায়, ‘‘মমতার নামে করে-কম্মে খাচ্ছে। আবার পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দেওয়া হুমকি!’’ বিক্ষোভকারীদের মধ্যে যুব তৃণমূল নেতা অলোক মণ্ডল, সহিদুল্লা গাজিরা টিপ্পনি কাটেন, ‘‘মমতার ছায়ায় জিতলে এমনই হয়!’’
অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পাননি জেলা পরিষদের স্থানীয় তৃণমূল সদস্য অর্চনা মৃধা। তিনি পরে বলেন, ‘‘মন্ত্রী যে জেলায় আসছেন, কেউ তা জানায়নি। আমি খুবই অপমানিত।’’ বিষয়টি তিনি জেলা পরিষদে জানাবেন বলেন তিনি। কেন এই বিভ্রাট? হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক কৃষি আধিকারিক শুকদেব খুটিয়া বলেন, ‘‘এমনটা হওয়ার কথা নয়। খতিয়ে দেখতে হবে।’’