হাসপাতাল থেকেই তথ্য পেত কিডনি চক্র

কিডনি পাচার চক্রের ঘটনায় প্রথম থেকেই নাম জড়িয়েছিল ই এম বাইপাস লাগোয়া এলাকার একটি হাসপাতালের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৮ ১১:১১
Share:

প্রতীকী ছবি।

হাসপাতাল থেকেই তথ্য চলে যেত কিডনি পাচার চক্রের কাছে। তদন্তে এ বার পুলিশের হাতে এমন তথ্যই উঠে এল।

Advertisement

কিডনি পাচার চক্রের ঘটনায় প্রথম থেকেই নাম জড়িয়েছিল ই এম বাইপাস লাগোয়া এলাকার একটি হাসপাতালের। পুলিশ জানতে পেরেছে, কিডনি গ্রহীতাদের সবিস্তার তথ্য হাসপাতালের কর্মীদের একাংশই পাচার করত।

যে রাতে নৈহাটি থেকে চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়, সেই রাতেই জানা গিয়েছিল, দিন সাতেক আগে বাইপাসের ধারের একটি হাসপাতালে মালদহের চাঁচলের আনসারুল হকের কিডনি নিয়ে এক ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। আনসারুলকে জোগাড় করেছিল পাচার চক্রের সদস্যেরাই। তবে চক্রের মূল চাঁই আক্রমের নাগাল পায়নি পুলিশ। তদন্তকারিদের ধারণা, সে ভিন্ রাজ্যে পালিয়েছে।

Advertisement

যে হাসপাতালে আনসারুলের কিডনি নেওয়া হয়েছে, সোমবার সেই হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে নৈহাটি থানার পুলিশ। তবে পুলিশকে তারা কোনও তথ্য দেয়নি। মঙ্গলবার ফের পুলিশ ওই হাসপাতালে গিয়ে তাদের ২৪ ঘণ্টা সময় দেয়। তার মধ্যে আনসারুল-সহ গত তিন মাসে ওই হাসপাতালে যাদের কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে, তাঁদের সবিস্তার তথ্য দিতে বলে।

আনসারুলের চিকিৎসা সংক্রান্ত সিসি ক্যামেরার ফুটেজও চেয়েছে পুলিশ। ব্যারাকপুর কমিশনারেট সূত্রে খবর, বুধবার রাতের মধ্যে ওই হাসপাতাল যদি কোনও তথ্য না দেয়, তা হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, মূলত কাজের টোপ দিয়ে কিডনি বিক্রেতা জোগাড় করা হত। সেই জন্য বিভিন্ন জেলায়, এমনকী ভিন্ রাজ্যেও আক্রমের দালাল ছড়ানো থাকত। তারা স্থানীয় ভাবে বিভিন্ন জায়গায় লিফলেট সেঁটে কলকাতায় কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিত। লিফলেটে দালালদের ফোন নম্বর থাকত। কেউ যোগাযোগ করলে তাকে কিডনির ডোনার জোগাড় করতে বলা হত। চাকরির খোঁজে আসা যুবকেরাই হত দালালদের আড়কাঠি। ডোনার জোগাড়ের বিনিময়ে মোটা টাকা কমিশন দেওয়া হত তাদের।

আইন অনুযায়ী যাঁর দেহে কিডনি প্রতিস্থাপন হবে, তাঁকেই ডোনার জোগাড় করতে হয়। রক্তের সম্পর্ক না থাকলে বেশ কিছু নিয়মকানুন মানতে হয়।

হাসপাতালে কারা কিডনির খোঁজে আসছেন, তা হাসপাতালের কর্মীরাই আগে জানতে পারেন। পুলিশ বলছে, তাঁদেরই কেউ কেউ আক্রম বা তার শাগরেদদের সেই তথ্য পাচার করত। তার পরেই কিডনি গ্রহীতার সঙ্গে যোগাযোগ করত চক্রের সদস্যরা। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন ১) কে কান্নন বলেন, ‘‘আমরা বেশ কিছু সূত্র পেয়েছি। আশা করছি দু’-এক দিনের মধ্যে পুরো রহস্য ভেদ করা সম্ভব হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন