অশান্তি-চিহ্ন: পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দু’টি গাড়ি। রবিবার দার্জিলিঙে। ছবি: এএফপি।
অশান্তি ক্রমেই বাড়ছে। তাই সর্বদল বৈঠক সাত দিন এগিয়ে আনল মোর্চা। ১৮ জুলাইয়ের বদলে আগামিকাল, মঙ্গলবার হবে এ বারের সর্বদল বৈঠক। সূত্রের খবর, মূলত জিএনএলএফের চাপে বৈঠক এগিয়ে আনা হচ্ছে। পাহাড়ে আন্দোলন ক্রমশ নেতাদের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে জিএনএলএফ এবং মোর্চার অন্দরে কানাঘুষো চলছে। এই পরিস্থিতিতে সর্বদল বৈঠকের জন্য আরও সাত-আট দিন অপেক্ষা করাটা ‘ঝুঁকি’র হবে, মনে করছেন নেতারা।
গত শনিবার দুপুরেই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে পাহাড়ের দলগুলিকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পত্রপাঠ সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে মোর্চা। তবে রবিবার মোর্চা নেতারা হঠাৎ সর্বদল বৈঠক এগিয়ে আনায় নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে। পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলির একাংশের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান নিয়েও সর্বদল বৈঠকে আলোচনা চাইছে মোর্চা।
মোর্চার একটি অংশের বক্তব্য, বৈঠক এগিয়ে আনার আরও কারণ রয়েছে। গুলিতে চার জনের মৃত্যুর পরে সরকারি দফতর, থানা, টয়ট্রেনের স্টেশন ভাঙচুর করা বা তাতে আগুন দেওয়ার ঘটনা বাড়তে শুরু করে। মোর্চার অনেকেই বুঝতে পারছেন না, এর পরে অসন্তোষের এই বহিঃপ্রকাশ কেমন হবে। এর মধ্যে রসদ ফুরোচ্ছে। আম-পাহাড়বাসীর এখন খুবই দুর্দশা। এই পরিস্থিতিতে কী করা হবে, সেটা ঠিক করতেই এই বৈঠক।
আরও পড়ুন:শান্তি রক্ষায় নজির গড়ল বসিরহাট উত্তর
মোর্চার সহ-সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ অবশ্য এ দিনও দাবি করেন, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নই নেই। তিনি বলেন, ‘‘এই ক’দিনে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। তাই জরুরি সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছে।’’ জিএনএলএফের মুখপাত্র নীরজ জিম্বা বলেন, ‘‘পাহাড়ের যা পরিস্থিতি, তাতে সবার এখনই বসা জরুরি। তবে রাজ্যের সঙ্গে আমরা কথা বলব না।’’
শনিবার রাত এবং রবিবার দিনভরও পাহাড়ে বিক্ষিপ্ত অশান্তি হয়। কার্শিয়াং মহকুমা শাসক, বিডিও দফতর, পোখরিবং গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে আগুন ধরানো হয়। পোখরিবং পুলিশ ক্যাম্পেও হামলা হয়েছে। সেখানকার অস্ত্র লুঠ হয়েছে বলে চাউর হলেও কোনও পুলিশকর্তাই এই নিয়ে মুখ খোলেননি। রবিবার ভোরে হামলা চলে সুখিয়াপোখরি ফাঁড়িতে। বিকেলে সোনাদা পুলিশ ফাঁড়িটিতে আগুন দেওয়া হয়। মোর্চা অবশ্য দাবি করেছে, তারা হিংসাত্মক আন্দোলন করেনি।