দাদাগিরি চালু আছে ভর্তিতে, বুঝছে তৃণমূল

শিক্ষামন্ত্রী তথা দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, ‘‘ভর্তিতে ছাত্র সংগঠনের কোনও ভূমিকাই থাকবে না। সে দলের হলেও। কঠোর হাতে মোকাবিলা করব।’’

Advertisement

দেবারতি সিংহচৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৮ ০৪:০৫
Share:

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

ছাত্র ভর্তির নামে দলের ছাত্র সংগঠন (টিএমসিপি) টাকা তুললে তা বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষামন্ত্রী তথা দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, ‘‘ভর্তিতে ছাত্র সংগঠনের কোনও ভূমিকাই থাকবে না। সে দলের হলেও। কঠোর হাতে মোকাবিলা করব।’’ কিন্তু তার পরেও দেখা যাচ্ছে, উপরতলার এই নির্দেশ কলেজে এসে উবে যাচ্ছে। ভর্তির মরসুম শুরু হতেই কলেজের ‘নিয়ন্ত্রণ’ চলে গিয়েছে ছাত্রনেতাদের হাতেই। অভিযোগ উঠেছে, যোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকেও ভর্তির জন্য টাকা চাওয়া হচ্ছে।

Advertisement

এমনকি, শুক্রবার ভর্তি শুরুর সঙ্গে সঙ্গে ছাত্র সংসদ দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয় দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজে। ওই ঘটনায় নিগৃহীত পড়ুয়াদের কয়েকজন শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেছেন।

শিক্ষা-প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত অনেকেই মনে করেন, ছাত্র ভর্তির নামে টাকা চাওয়ার ব্যাধির একমাত্র দাওয়াই কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইন ভর্তি ব্যবস্থা চালু করা। যা করতে এখনও রাজি নয় শিক্ষা দফতর। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য মনে করেন, কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভর্তি হলেই এ সব বন্ধ হবে, তা ঠিক নয়। তা হলে কী ভাবে তা বন্ধ হবে? জুতসই জবাব নেই শিক্ষামন্ত্রীর কাছে।

Advertisement

এমন পরিস্থিতিতে ভর্তি নিয়ে যে গোলমাল শুরু হয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন টিএমসিপি নেতৃত্বই। সংগঠনের রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত বলেন, ‘‘মূলত কলকাতার কয়েকটি কলেজ থেকে এখন পর্যন্ত অভিযোগ পাচ্ছি। গুরুদাস কলেজ, আশুতোষ কলেজ, বিদ্যাসাগর কলেজ, সুরেন্দ্রনাথ, বঙ্গবাসী, বেহালা কলেজে টাকার বিনিময়ে ভর্তির টোপ দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

ব্যবস্থা কিছু নেওয়া হয়েছে কি? জয়ার বক্তব্য, ‘‘যেখানেই অভিযোগ পাচ্ছি, নিজে অভিযোগকারীকে সংশ্লিষ্ট কলেজের ছাত্র সংসদের সদস্যদের সামনে দাঁড় করাচ্ছি। কে টাকা চেয়েছে, চিহ্নিত করতে বলছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাচ্ছি, তাদের দলের কাজ থেকে সরিয়ে রাখা হচ্ছে।’’ তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বহিরাগতরা টাকার ‘টোপ’ দিচ্ছে বলে টিএমসিপি নেতৃত্বের দাবি। জয়ার কথায়, ‘‘বহিরাগতরাই মূলত টাকা চাইছে বলে জানতে পারছি। ওরা টিএমসিপির নাম ভাঙিয়ে প্রতারণার চেষ্টা করছে।’’ এই ‘বহিরাগত’রা কোনও ভাবে স্থানীয় তৃণমূল নেতা বা ছাত্র সংসদের নেতাদের ঘনিষ্ঠ বলেই দলীয় সূত্রের খবর। বহিরাগতরা যাতে কলেজ ভর্তির সঙ্গে জড়িয়ে না পড়েন, সে জন্য সতর্ক করেছেন শিক্ষামন্ত্রীও। পার্থবাবুর কথায়, ‘‘বহিরাগতদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন