রোগিণী ফেরানোর নালিশ বাঁকুড়া মেডিক্যালে

সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ফেরানো যাবে না—বার বার বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সে নির্দেশ ভঙ্গের অভিযোগ উঠল বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০৪
Share:

সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ফেরানো যাবে না—বার বার বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সে নির্দেশ ভঙ্গের অভিযোগ উঠল বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে পেটের যন্ত্রণায় কাতর বছর উনিশের গৃহবধূ প্রতিমা মুর্মুকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার মহিলা সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি হতে বলেন। অভিযোগ, ভর্তি না নিয়ে তাঁকে ওয়ার্ড থেকে বার করে দেন ওয়ার্ডের ডাক্তার-নার্সেরা। ছ’মাসের ছেলে কোলে হাসপাতালের বাইরে গাছতলায় স্বামীর হাত আঁকড়ে রাতভর যন্ত্রণা সহ্য করেন বধূটি। বুধবার অবশ্য সুপারের হস্তক্ষেপে তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে।

বাঁকুড়া মেডিক্যালের সুপার শুভেন্দুবিকাশ সাহার মন্তব্য, ‘‘ঘটনাটা শুনেই তদন্ত শুরু করেছি।” রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সব খতিয়ে দেখুন। দোষ প্রমাণিত হলে, ব্যবস্থা নেব।’’

Advertisement

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ স্ত্রী প্রতিমাকে নিয়ে বাঁকুড়া মেডিক্যালে যান সিমলাপালের শুকনাখালির বাসিন্দা পরিমল মুর্মু। পরিমলবাবুর দাবি, জরুরি বিভাগের ডাক্তার প্রতিমাকে পরীক্ষা করে তাঁকে বলেন, ‘আপনার স্ত্রী-র পেটে টিউমার হয়েছে। ওঁকে এখনই ভর্তি করাতে হবে’। মহিলা সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি করাতে টিকিটে লিখেও দেন ওই ডাক্তার। কিন্তু প্রতিমা তা নিয়ে ওই ওয়ার্ডে যেতে ডাক্তার ও নার্সেরা তাঁকে বলেন, ‘ভর্তি নেওয়া যাবে না’।

আরও পড়ুন: উস্কানিতে পা দিতে নিষেধ মুখ্যমন্ত্রীর

পরিমলের অভিযোগ, ‘‘কেন ভর্তি নেওয়া যাবে না জানতে চাওয়ায় ওঁরা প্রতিমাকে প্রায় তাড়িয়ে দেওয়ার মতো করে ওয়ার্ড থেকে চলে যেতে বলেন। আমি প্রতিমার যন্ত্রণার কথা বলে ওঁদের দু’বার অনুরোধ করেছি। ওঁরা কথা শুনতে চাননি।’’

রাতে হাসপাতালের বাইরে একটি গাছতলায় আশ্রয় নেয় পরিবারটি। পরিমলের কথায়, ‘‘প্রতিমা আমার হাত আঁকড়ে কাতরাচ্ছে! ছেলে কাঁদছে। কী ভাবে রাতটা পেরিয়েছে, কী বলব!’’ভোর হতেই সিমলাপালের তৃণমূল নেতা সুনীল সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পরিমল। তাঁর পরামর্শে সুপারের সঙ্গে দেখা করে জানান সব কিছু। তখন প্রতিমাকে ভর্তি করাতে বেগ পেতে হয়নি।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, আপাতত যন্ত্রণা কমেছে বধূটির। মঙ্গলবার রাতে মহিলা সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে কর্তব্যরত ডাক্তার বা নার্সদের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। সূত্রের খবর, তাঁরা সুপারের কাছে দাবি করেছেন, ভর্তি-প্রক্রিয়া চলাকালীন প্রতিমা নিজেই ওয়ার্ড ছেড়ে বেরিয়ে যান। তবে সুপারের আশ্বাস, ‘‘তদন্তে সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন