kaushik basu

‘অমর্ত্য সেনকে বিশ্বভারতী যা হয়রান করছে এবং যে ভাবে উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হয়েছে, তা ভারতের লজ্জা’

অমর্ত্য সেনকে তাঁর শান্তিনিকেতনের প্রতীচী বাড়ির ১৩ ডেসিমাল জমি খালি করার যে নির্দেশ দিয়েছে বিশ্বভারতী, তার তীব্র নিন্দা করে নিজের শিক্ষক অমর্ত্যের পাশে দাঁড়িয়েছেন অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:২৪
Share:

দেশের প্রাক্তন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু। ফাইল চিত্র।

বিশ্বভারতী যে ভাবে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদের নোটিস দিয়ে ‘হয়রান’ করছে, তা ‘ভারতের লজ্জা’ বলে মন্তব্য করলেন দেশের প্রাক্তন অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৌশিক বসু। শনিবার সন্ধ্যায় কৌশিক যখন টুইটে এই অভিযোগ তোলেন, তার ঘণ্টাখানেক পরেই বিশ্বভারতীতে ইদের বিশেষ উপাসনায় ফের নাম না করে অমর্ত্যকে নিশানা করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।

Advertisement

অমর্ত্য সেনকে তাঁর শান্তিনিকেতনের প্রতীচী বাড়ির ১৩ ডেসিমাল জমি খালি করার যে নির্দেশ দিয়েছে বিশ্বভারতী, তার তীব্র নিন্দা করে নিজের শিক্ষক অমর্ত্যের পাশে দাঁড়িয়েছেন অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু। এ দিন সন্ধ্যায় তাঁর টুইট, ‘অমর্ত্য সেনকে বিশ্বভারতী যা হয়রান করছে ও যে ভাবে উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হয়েছে, তা ভারতের লজ্জা! উনি ভারতের নাগরিক এবং বিশ্বের আইকন।’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘অমর্ত্যের সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই যে বিশ্বভারতী এই কাজে নেমেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এই ঘটনা ভারতীয় গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার।’’

বিজেপি তথা মোদী সরকারের নানা কার্যকলাপের কড়া সমালোচক অমর্ত্য সেনকে নানা ঘটনায় বরাবরই গেরুয়া শিবিরের আক্রমণের মুখোমুখি হতে হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ বিশ্বভারতী যে ভাবে জমি-বিতর্কে তাঁকে নোটিস পাঠিয়েছে, তাতেও সেই ছায়া দেখা গিয়েছে বলে আগেও বিশ্বভারতীর শিক্ষক, পড়ুয়া ও আশ্রমিকেরা অভিযোগ তুলেছেন। এ বার তাঁর ছাত্র কৌশিক বসুও একই অভিযোগ তুললেন।

Advertisement

বুধবার রাতে নোটিস জারি করে বিশ্বভারতী জানিয়ে দেয়, অমর্ত্য ও সংশ্লিষ্ট যাঁরা ১৩ ডেসিমাল জমি (নোটিসে বলা হয়েছে, প্রতীচীর উত্তর-পশ্চিম কোণের জমি) দখলে রেখেছেন, তাঁদের ১৫ দিনের মধ্যে বা ৬ মে-র মধ্যে তা খালি করে দিতে হবে। অন্যথায় অমর্ত্য এবং সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিকে উল্লিখিত জায়গা থেকে ‘উচ্ছেদ’ করা হবে। এই নিয়ে সমালোচনার পরেও ফের এ দিন সন্ধ্যায় ইদ উপলক্ষে বিশেষ উপাসনায় উপাচার্য উপস্থিত সকলকে বলেন, ‘‘আমি যদি বলি দুয়ে-দুয়ে তিন, বলবেন— না, ভুল বলছেন আপনি। কিন্তু কোনও বিখ্যাত পরিবারের সন্তান যদি বলে দুয়ে-দুয়ে তিন, তখন সবাই বলবেন— হ্যাঁ, খুব ভাল বলছেন তো।’’

এর আগে উপাসনাগৃহ থেকে দুর্গাপুজো-সহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করেছিলেন উপাচার্য। শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের কাছে অভিযোগ পেয়ে তা নিয়ে বিশ্বভারতীর কাছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর (পিএমও) রিপোর্টও তলব করেছিল বলে সূত্রের খবর। তার পরেও উপাচার্যের এ দিনের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন অনেকে। প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, ‘‘ওঁর (উপাচার্যের) মাথার গন্ডগোল হয়ে গিয়েছে। তাই উনি এখন অমর্ত্য সেনের পিছনে পড়েছেন। যত দিন না জমি বিতর্কের নিষ্পত্তি হচ্ছে, উনি এটা চালিয়ে যাবেন।’’ বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী তথা আশ্রমিক সৌরীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘অমর্ত্য সেনকে নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। আমরা চাই তাঁর সম্মান অটুট থাকুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন