Amit shah and Mamata Banerjee

মতুয়াদের ‘ভয়’ নেই, শাহের আশ্বাসে পাল্টা মমতাদের

রাজ্যে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন থেকে ধারাবাহিক ভাবে মতুয়া-অধ্যুষিত এলাকায় ভাল ফল করছে বিজেপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:৪১
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) প্রক্রিয়া চলাকালীন মতুয়া উদ্বাস্তুদের ভোটাধিকার ও নাগরিকত্বের প্রশ্নে ধারাবাহিক ভাবে বিজেপিকে নিশানা করছে তৃণমূল কংগ্রেস-সহ অন্যেরা। এই আবহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরে এ বার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শরণার্থীদের নাগরিকত্ব নিয়ে ভয় পাওয়ার দরকার নেই বলে আশ্বাস দিলেন। যদিও শাহ ও বিজেপি নেতৃত্বকে পাল্টা বিঁধেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাজ্যে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন থেকে ধারাবাহিক ভাবে মতুয়া-অধ্যুষিত এলাকায় ভাল ফল করছে বিজেপি। কিন্তু এসআইআর প্রক্রিয়ায় পর্যাপ্ত নথির অভাবে মতুয়াদের অনেকেই ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কা করছেন। সম্প্রতি মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতা তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের একটি মন্তব্যে জলঘোলা হয়েছে আরও। এই পরিস্থিতিতে শান্তনুকে পাশে বসিয়ে মঙ্গলবার বিধাননগরের হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলনে শাহ বলেছেন, “মতুয়াদের ভয় পাওয়ার কোনও দরকার নেই। এটা বিজেপির প্রতিশ্রুতি, যে শরণার্থীরা পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন, তাঁরা ভারতের নাগরিক। এঁদের কেউ ক্ষতি করতে পারবে না। মমতাও (ক্ষতি) করতে পারবেন না!”

বাঁকুড়ার দলীয় সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা শাহকে নিশানা করে পাল্টা বলেছেন, “এক বার তো নাটক করলেন! আদিবাসী, তফসিলিদের বাড়ি গিয়ে হোটেলের থালা পেতে খেয়ে বললেন, তফসিলির বাড়িতে খাচ্ছি। আর আজ নমঃশূদ্র, মতুয়া, রাজবংশী, হিন্দু, সংখ্যালঘুদের নাম বাদ।” প্রসঙ্গত, মমতা এ দিন যেখানে সভা করেছেন, তার অদূরেই দামোদরের চরে থাকা মতুয়াদের অনেকের এসআইআর-এর খসড়া তালিকায় নাম নেই বলে দাবি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকও এ দিন বলেছেন, “মতুয়াদের নাগরিকত্বের গাজর দেখিয়েছে বিজেপি! তৃণমূল নয়, মতুয়াদের প্রতিনিধি, বিজেপির সাংসদ, বিধায়কেরা বলছেন, মতুয়াদের নাম বাদ গেলে বাদ যাবে!” তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামী ৯ জানুয়ারি বনগাঁ সফরে গিয়ে দু’বছরের ব্যবধানে ফের মতুয়া-ধাম গাইঘাটার ঠাকুরনগরে যেতে পারেন অভিষেক।

মতুয়া সমাজের অন্যতম নেত্রী তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুরেরও বক্তব্য, “এসআইআর করে নাম কেটে দিয়ে (শাহ) বলছেন, ভয় নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার বার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কারা শরণার্থী ও কারা অনুপ্রবেশকারী, তা শাহদের স্পষ্ট করতে হবে। ভবিষ্যতে ধরপাকড় হলে মতুয়াদের অনুপ্রবেশকারী হিসাবে দাগিয়ে দেওয়া হতে পারে।”

প্রসঙ্গত, মোদী-শাহের পাশাপাশি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বও বার বার মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে বার বার আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁদের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে (সিএএ) আবেদন করার আর্জিও জানিয়েছেন বিজেপির তাবড় নেতৃত্ব। তবে মতুয়াদের একাংশের বক্তব্য, তাঁরা সিএএ-তে আবেদন করেছেন। কিন্তু শুনানি-পর্ব চলাকালীন নাগরিকত্বের নথি মিলবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি সূত্রে ইঙ্গিত, নির্বাচন কমিশনের ‘অনুসন্ধানে’র ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কোনও ‘সম্মতি’র ছাড়পত্র দিতে পারে কি না, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে। তেমনটা হলে সেই শংসাপত্রের ভিত্তিতে মতুয়াদের নাম ভোটার তালিকায় রাখা এবং শুনানিতে তাঁরা অতিরিক্ত সময় পান কি না, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে দলের অন্দরে।

দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে মতুয়াদের ভোটাধিকার যাতে নিশ্চিত ভাবে থাকে, তা নিয়ে এ দিনই আর্জি জানিয়েছেন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী। মতুয়াদের নিয়ে বিজেপি ও তৃণমূল, উভয়ের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ তুলে তাঁদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার দাবি তুলেছে সিপিএম-ও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন