পড়া কত দূর, জানতে এলেন না অমিত স্যার

২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের কলকাতা সফরে এসে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত ৭৭ হাজার বুথে কমিটি গঠন-সহ এক গুচ্ছ কাজ দিয়ে গিয়েছিলেন। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সেগুলি শেষ করার নির্দেশও ছিল অমিতের। কিন্তু মেরেকেটে হাজার চল্লিশ বুথেও পৌঁছাতে পারেনি বলে বিজেপির কেউ কেউ দাবি করেন।

Advertisement

রোশনী মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৯
Share:

পরীক্ষায় ভাল ফল করার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের কিছু ‘হোমটাস্ক’ গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে দিয়ে গিয়েছিলেন মাস্টারমশাই। বলে গিয়েছিলেন, জানুয়ারিতে আবার এসে দেখবেন, পরীক্ষার প্রস্তুতি কত দূর এগোল। কিন্তু তিনি খবর পেয়েছেন, হোমটাস্কে মোটেই মন ছিল না পড়ুয়াদের। মাস্টারমশাইয়ের আসার সময় এগিয়ে আসতেই তারা ‘ধর তক্তা, মার পেরেক’ করে কোনও মতে কাজ শেষ করতে নেমেছে। তাতেও সকলের কাজ শেষ হচ্ছে না। পড়ুয়াদের এই দশার কথা জেনে জানুয়ারির সফল বাতিল করেছেন বিরক্ত মাস্টারমশাই।

Advertisement

মাস্টারমশাইয়ের নাম অমিত শাহ! আর ছাত্র-ছাত্রীদের ভূমিকায় পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি-র নেতা-কর্মীরা!

বঙ্গ বিজেপি-রই একাংশেরই দাবি, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের কলকাতা সফরে এসে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত ৭৭ হাজার বুথে কমিটি গঠন-সহ এক গুচ্ছ কাজ দিয়ে গিয়েছিলেন। ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সেগুলি শেষ করার নির্দেশও ছিল অমিতের। কিন্তু মেরেকেটে হাজার চল্লিশ বুথেও পৌঁছাতে পারেনি বলে বিজেপির কেউ কেউ দাবি করেন। রাজ্য সভাপতি ঘনিষ্ঠদের অবশ্য দাবি, প্রায় সব বুথেই উঠেছে গেরুয়া ঝান্ডা।

Advertisement

তা হলে অমিত আসছেন না কেন? সর্বভারতীয় সভাপতি জেনেছেন রাজ্যের দেওয়ার রিপোর্ট যথাযথ নয়। তাই জানুয়ারির বঙ্গ সফর বাতিল করেছেন তিনি। এর আগে ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে বঙ্গ সফরে এসেও অমিত যে সব কাজ দিয়েছিলেন, সেগুলি সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ করতে পারেননি রাজ্য নেতৃত্ব। সেই কারণে গত সেপ্টেম্বরে অমিতের কাছে ভর্ৎসনা এবং কটাক্ষ শুনতে হয় তাঁদের। তার পরেও তাঁদের কাজে গতি না আসায় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ বলে মনে করছেন রাজ্যে নেতাদের অনেকে।

রাজ্য বিজেপি-র এক নেতার ব্যাখ্যা, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, তামিলনাড়ু, কেরল, ত্রিপুরাকে পাখির চোখ করবে দল। কারণ, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়ার জন্যই দলের ভোটের হার বাড়া কঠিন। কিন্তু এই চারটি অ-বিজেপি রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের এগোনোর সম্ভাবনা রয়েছে। সে কথা মাথায় রেখেই দু’মাস অন্তর এই রাজ্যগুলিতে সফরের প্রাথমিক পরিকল্পনা নিয়েছিলেন অমিত। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের দল শুরুতেই তাঁকে এমন হতাশ করেছে যে, তিনি এ রাজ্যে আসা পিছিয়ে দিচ্ছেন।

বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য এই ব্যাখ্যায় সহমত নন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘জানুয়ারিতে উপনির্বাচন হচ্ছে। তা ছাড়া, আমাদের দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক আসন্ন। তার জন্য ব্যস্ততা রয়েছে। এই সব মিলিয়ে হয়তো সভাপতি জানুয়ারি মাসে আসতে পারছেন না। কিন্তু ফেব্রুয়ারি বা তার পরে তিনি আসবেন।’’ দিলীপবাবুর আরও দাবি, ‘‘আমরা কাজ করতে পারিনি, এই ধারণা ঠিক নয়। বেশির ভাগ বুথ কমিটিই গঠন হয়ে গিয়েছে। কিছু জায়গায় রাজনৈতিক বাধা আছে। সেগুলোতেও ধীরে ধীরে হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন