আগুন লাগার পরই রোগীদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। নিজস্ব চিত্র।
সকাল তখন সওয়া ১১টা। সবে রোগীকে অ়জ্ঞান করা হয়েছে। অস্ত্রোপচার করা হবে। হঠাত্ই ‘আগুন লেগেছে’ আওয়াজ। অপারেশন থিয়েটারেই তড়িঘড়ি জ্ঞান ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। চিকিত্সা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে ‘রিভার্স’ বলা হয়। জ্ঞান ফেরার পরেই সেই রোগীদের স্ট্রেচারে চাপিয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু। প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ থেকে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। গোটা হাসপাতাল চত্বর তত ক্ষণে কালো পুরু ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে।
আমরি হাসপাতালের স্মৃতি ফিরিয়ে সোমবার সকালে এমন ভয়ঙ্কর ছবি দেখা গেল রাজ্যের একমাত্র সরকারি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আগুনের খবর পেয়ে নবান্নে যাওয়ার পথে ঘটনাস্থলে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এবং সব রোগীই সুরক্ষিত আছেন। পরে তিনি বলেন, ‘‘কেন আগুন লেগেছে, আদৌ লেগেছে না লাগানো হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হবে।’’ এ দিন ওই বিল্ডিং-এ আগুন লাগার সময় সেখানে ভর্তি ছিলেন প্রায় ২০০ জন রোগী। এর মধ্যে চারজন রোগীর অস্ত্রোপচার চলছিল। এক রোগীর আত্মীয় বলেন, ‘‘আমরা তখন ওটির বাইরে ছিলাম। হঠাত্ই এক জন নার্স এসে বলেন রোগীকে আপাতত ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগুন লেগেছে। পরে অপারেশন করা হবে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকাল সওয়া ১১টা নাগাদ এসএসকেএম হাসপাতালের রোনাল্ড রস বিল্ডিং-এর ছ’তলা থেকে ধোঁয়া বেরতে দেখেন হাসপাতালের কয়েক জন কর্মী। ধোঁয়ার সঙ্গে আগুনের লেলিহান শিখা দেখে আঁতকে ওঠেন রোগীর পরিজনেরা। খবর যায় দমকলে। প্রথমে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন পৌঁছয় হাসপাতালে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকায় পরে ঘটনাস্থলে ১৬টি ইঞ্জিন আসে। তার আগে যদিও হাসপাতালের কর্মী-সহ সেখানে হাজির পুলিশকর্মীরা আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান।
ওই রোনাল্ড রস বিল্ডিংয়েই রয়েছে কয়েকটি অপারেশন থিয়েটার। রয়েছে হাসপাতালের লাইব্রেরি। মূলত প্লাস্টিক সার্জারি করা হবে এমন রোগীদেরই রাখা হয় ওই ব্লিডিং-এ। কিন্তু, ছ’তলার উপরের ওই আগুন নেভাতে গিয়ে বেগ পেতে হয় দমকল কর্মীদের। তত ক্ষণে যদিও অপারেশন থিয়েটার-সহ গোটা বিভাগ থেকেই সব রোগীকে নিরাপদে বের করে নেওয়া হয়।
আরও খবর...