কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের তা জানাতে চেয়েছিলেন বাম বিধায়কেরা। কিন্তু বাধা পেয়ে নবান্নে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা। বিধায়কেরা প্রেস কর্নারের সামনে বসে পড়েন। এই অবস্থান-বিক্ষোভ চলে প্রায় আধ ঘণ্টা। স্লোগান তো ছিলই। বক্তৃতাও দেন কেউ কেউ। এর পরে দল বেঁধে বিক্ষোভ দেখানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বাম বিধায়কেরা চলে যান।
প্রশাসনের সদর দফতর মহাকরণ থেকে নবান্নে চলে যাওয়ার পরে নতুন বাড়িতে যাবতীয় অবস্থান-বিক্ষোভ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। তারা নিয়ম করেছে, একমাত্র সরকারি কারণেই মন্ত্রী-আধিকারিক অথবা তাঁদের অতিথিরা প্রেস কর্নারে সাংবাদিক বৈঠকে করতে পারবেন। এই নির্দেশিকার আওতা থেকে ছাড় মেলেনি বিজেপি-র কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলেরও। গত দু’মাসে কয়েক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নবান্নে এলেও তাঁরা সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন সদর কার্যালয়ে ঢোকার মুখে, ভিআইপি লিফ্টের সামনে। রাজ্য সরকারের এই নতুন ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা অবশ্য কম হয়নি।
বুধবার সেই প্রেস কর্নারে দাঁড়িয়েই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন বাম বিধায়কেরা। আর তা নিয়েই সমস্যার সূত্রপাত। পাটের সহায়ক-মূল্য বাড়ানোর দাবিতে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর কাছে স্মারকলিপি দিতে যান বাম পরিষদীয় দলের ছয় প্রতিনিধি। দলে প্রাক্তন মন্ত্রী আনিসুর রহমান ছাড়াও ছিলেন সিপিএমের বিধায়ক ইনসার আলি, কানাইচন্দ্র মণ্ডল, ফরওয়াডর্র্ ব্লকের বিজয় বাগদি, আরএসপি-র ঈদ মহম্মদ, সিপিআইয়ের আনন্দময় মণ্ডল। মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাঁরা প্রেস কর্নারে আসেন। তখন পোডিয়ামের দরজা বন্ধ করে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁরা বলেন, ‘আপনারা পোডিয়াম ব্যবহার করতে পারবেন না। সে-রকম কোনও নির্দেশ নেই।’ বিধায়কেরা তখন স্লোগান দিতে দিতে প্রেস কর্নারের সামনে বসে পড়েন। চিৎকার-চেঁচামেচিতে সরগরম হয়ে ওঠে নবান্ন। ওই চত্বর পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ হয়ে যায়। ঘনঘন ওয়াকিটকিতে পুলিশের বড়কর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন নবান্নের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার সমর বসু। তবে পুলিশ তাঁদের বাধাও দেয়নি।
বিক্ষোভের সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে না-থাকলেও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন। বিক্ষোভ দেখতে বহু কর্মীও জড়ো হন। বাম বিধায়কেরা কিছু পরে চলে যাওয়ার সময় হুঁশিয়ারি দেন, “এটা শুরু। এর পরে দল বেঁধে আসব। দেখি, কে আমাদের আটকায়!”
এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কৃষিমন্ত্রী সাফাই দেন, “ওঁরা তো স্মারকলিপি দিতে এসেছিলেন। সাংবাদিক বৈঠক করতে তো আসেননি। সেটা বিধানসভায় গিয়ে করতে পারতেন। প্রেস ক্লাব ভাড়া নিয়ে করা যেত।”