চোলাই ঠেকের নালিকের বাড়িতে সোমবার আগুন লাগান স্থানীয় বাসিন্দারা। ময়নায়। ছবি: পার্থপ্রতীম দাস।
প্রকাশ্যে চোলাই মদের এতগুলি ঠেক চলছিল কী ভাবে ময়নায়?
সামনেই পঞ্চায়েত অফিস। শাসকদলের হাতেই রয়েছে ওই পঞ্চায়েত। সেই পঞ্চায়েত অফিসের নাকের ডগায় কী ভাবে বছরের পর বছর ধরে চোলাই মদের ঠেক চলছিল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তা-ও আবার একটা-দু’টো নয়। চলছিল চোলাই মদের কম করে, পাঁচ-ছ’টি ঠেক। বেশ রমরমিয়েই চলছিল। গত কালের ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দারা তো এ কথা জানিয়েছিলেনই, আজ সে কথা কবুল করলেন গোজিলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান চিত্তরঞ্জন জানাও। তাঁর কথায়, ‘যে-ঠেকের চোলাই মদ খেয়ে এত জনের মৃত্যু হল, সেই ঠেক-মালিক মাণিক দাস বহু বার গ্রেফতার হয়েছে। তাকে ঠেক চালাতে বারণ করা হয়েছে অনেক বার। তবু ও শোনেনি।’ গত কালের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩-য়। তমলুক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে আরও ৩৬ জনকে। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ এলাকায় চোলাইয়ের সবক’টি ঠেক বন্ধ করে দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, যে পঞ্চায়েতে তৃণমূলের আধিপত্য প্রশ্নাতীত, সেখানে যদি এ ব্যাপারে শাসকদলের নেতাদের সত্যি-সত্যিই আপত্তি থাকত, তা হলে এলাকায় চোলাই মদের এতগুলি ঠেক চালানোর সাহস কি কেউ পেত? ওই ঘটনায় মৃত কিয়ারানা গ্রামের বাসিন্দা মাণিক ধরের স্ত্রী মায়া ধর বলেছেন, ‘চোলাই মদ খেয়েই এই ঘটনা ঘটেছে। বহু দিন ধরেই এলাকায় চোলাই মদের ঠেকগুলি চলছিল। কোনও ভাবেই সেগুলিকে তুলে দেওয়া য়ায়নি।’ কিয়ারানা গ্রামে মূল চোলাই ঠেকের মালিক মাণিক দাসের বাড়ি আজ সকাল থেকেই ঘেরাও করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মাণিকের পাকা বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। তবে মাণিক কাল রাতেই সপরিবারে পালিয়ে যান।
তবে ‘বিষমদে’ই মৃত্যু কি না, সে ব্যাপারে পুলিশ বা প্রশাসন, কেউই এখনও নিশ্চিত নয়। ওই দিন রাতে যে খাবার ও পানীয় ওই সব চোলাইয়ের ঠেকে খাওয়া হয়েছিল, তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।